ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

কুষ্টিয়ায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২২
কুষ্টিয়ায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন ফাইল ছবি

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্বর্ণ কারিগর ইমরান শেখ হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড, দু’জনের আমৃত্যু ও তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং জেলার দৌলতপুর থানার বোমা হামলা মামলায় দু’জনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে জরিমানা করা হয়েছে।

 

ইমরান হত্যার মামলায় মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক তাজুল ইসলামের আদালতে সব আসামির উপস্থিতিতে জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

অন্যদিকে দৌলতপুর থানার একটি বোমা হামলা মামলায় দুপুরের দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে দু’জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলাম।

ইমরান হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হলেন- কুমারখালী উপজেলার কোমরপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের ছেলে শহিদুর রহমান পিরু ওরফে মিঠুন।

আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দু’জন হলেন- কুমারখালীর মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম লতিফের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫) ও মেহিদী হাসান জয় (২৬)। এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন- নাহিদ হাসান, ওয়াদুদ ইসলাম ও মুন্সি অনিক হাসান।

এছাড়া, দৌলতপুর থানার বোমা হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হলেন দু’জন হলেন- জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ও জামিরুল ইসলাম ওরফে মরু।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৬ মার্চ দুপুরে কুমারখালী উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের বাদশা শেখের ছেলে ইমরান শেখ আত্মীয় বাড়িতে দাওয়াতে যাওয়ার উদ্দেশে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। দু’দিন পর একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী গ্রামের ভুট্টাক্ষেত থেকে ইমরানের মাথা বিহীন মরদেহ উদ্ধার করে কুমারখালী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে অপহরণ ও গলা কেটে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা ও মরদেহ গুমসহ সোরটসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে কুমারখালী থানায় মামলা করেন।

এছাড়া ২০১০ সালের ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংসদ সদস্য আফাজ উদ্দিন আহম্মেদ তার নিজ বাড়িতে স্থানীয় জনগণ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অতর্কিতে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় বোমা বহনকারী দু’জন এবং সাক্ষাৎপ্রার্থী এক স্কুল শিক্ষকসহ তিনজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন গুরুতর আহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সংসদ সদস্যের ছেলে এজাজ আহমেদ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে অপহরণ, হত্যা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে ১৯ মে ২০১৯ সালে এবং বোমা হামলা মামলায় ২০১১ সালের ১৪ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন কুমারখালী ও দৌলতপুর থানা পুলিশ।
 
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বাংলানিউজকে বলেন, কুমারখালীতে স্বর্ণ কারিগর ইমরান শেখকে হত্যা মামলায় দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একজনের ফাঁসি, দু’জনের আমৃত্যু এবং তিনজনের যাবজ্জীবন সাজাসহ প্রত্যেকেকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

এছাড়া পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দৌলতপুরে বোমা হামলা করে নিরীহ মানুষকে হত্যার দায়ে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দু’জনের যাবজ্জীবনসহ জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।