নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে যুবক আল-আমিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানাধীন পূর্ব সনমান্দি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- সৈয়দ হোসেন সাগর (২৮), মো. কবির হোসেন (৩২), মো. ইউসুফ (৩২), নাসিমা বেগম (৪৪)।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় নিহত আল-আমিন (২২) মূলত এলাকায় চুরি এবং ছিনতাই কাজে জড়িত ছিল। তার এই কাজের জন্য তার পরিবারকে প্রায় সময়ই বিব্রত হতে হয় এবং বারবার জরিমানা দিতে হয়। এই নিয়ে গ্রামে স্থানীয় সালিশ হয়। তার এরূপ আচরণের জন্য প্রায় সময়ই তার পরিবার তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতো। গত ৯ জানুয়ারি রাতে সে শিকল খুলে পালিয়ে গেলে তাকে আর খুঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি। পালিয়ে যাওয়ায় তার পরিবার ও তার প্রতিবেশীরা পুনরায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে ভেবে ভিকটিমের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়।
র্যাব-১১ এর ছায়া তদন্তের এক পর্যায়ে তদন্ত কাজে ভিকটিমের পরিবারের অনিহা এবং অসহযোগিতা পরিলক্ষিত হলে ভিকটিমের বড় ভাই ইউসুফকে সন্দেহ হয় এবং তাকে র্যাব-১১ এর সদর দপ্তরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে উক্ত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। তার বক্তব্য মতে, ভিকটিম চুরি ও ছিনতাই এর কাজে জড়িত থাকার কারণে তার প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে ভিকটিমের চাচাতো ভাই সৈয়দ হোসেন সাগর, ভিকটিমের প্রতিবেশী কবির এবং জহির তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ভিকটিমকে তার বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ফসলের মাঠে সৈয়দ হোসেন সাগর, কবির এবং জাহির গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে মারধর করছে বলে ভিকটিমের মা জানতে পারে।
বিষয়টি ভিকটিমের মা তার বড় ছেলে ইউসুফকে জানালে ইউসুফ ঘটনাস্থলে আসে এবং তার ভাইকে মারধর না করতে অনুরোধ করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড় ভাই ইউসুফ মুগড়াপাড়া পুরাতন সেবা ক্লিনিক এলাকায় নাইট ডিউটির কাজ করে বিধায় সে তার কর্মস্থলে ফিরে আসে। সে রাতেই ভিকটিমের মা ইউসুফকে আবার ডাকলে সে ঘটনাস্থলে পুনরায় যায় এবং সেখানে তার মা ও তার মামা শহীদুল্লাহ এবং সৈয়দ হোসেন সাগর, জহির এবং কবিরকে দেখতে পায়। ইউসুফ তার মাকে ভাই আল-আমিনের কথা জিজ্ঞাসা করলে সে জানতে পারে যে আল-আমিনকে সৈয়দ হোসেন সাগর, কবির এবং জাহির মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে জমির আইলের উপরে রাখা স্তুপের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে। ঘটনাস্থলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ইউসুফ, তার মা ও মামাকে এ ব্যাপারে মুখ খুললে তাদেরকেও হত্যা করবে বলে হুমকি দেযন।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি সোনারগা থানাধীন হামজানি এলাকার জমির আইলের উপর জমানো আগাছার স্তূপের মধ্য থেকে আল-জামিন (২২) এর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
এমআরপি/এসএম