ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ডকু-ফিকশন 'ফাইল নম্বর ৬০৬'

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ডকু-ফিকশন 'ফাইল নম্বর ৬০৬'

ঢাকা: উদ্বোধনী প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দা শাখার গোপন নথি অবলম্বনে প্রথম ডকু-ফিকশন 'ফাইল নম্বর ৬০৬'।

আগামী মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের মিলনায়তনে বিকেলে ৪টায় এর প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

প্রেক্ষাপট
১৯৪৮ সাল, মার্চ মাস। সদ্য জন্ম নেওয়া রাষ্ট্রের ভাষা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। শেখ মুজিবুর রহমানের বয়স তখন মাত্র ২৮ বছর। আলোচনার অংশ হিসেবে তাঁর ওপর কড়া নজর রাখতে শুরু করে পাকিস্তানি গোয়েন্দারা। পাকিস্তানের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ প্রতিদিন প্রতিমুহূর্ত তার কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে থাকে এবং তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো রুটিন ওয়ার্ক হয়ে যায়। গোয়েন্দা বিভাগ এ সংক্রান্ত রিপোর্টগুলো নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ১৯৪৮ সালে একটা ব্যক্তিগত ফাইল খোলে এবং তাতে সকল তথ্য সংরক্ষণ করা শুরু করে। যা ব্যক্তিগত ফাইল বা পিএফ নামে পরিচিত।  

সেই ফাইলগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান' শিরোনামে চৌদ্দ খণ্ডের বই সম্পাদনা করেন। মাত্র আঠাশ বছরের এক তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের কোন প্রেক্ষাপটে পার্সোনাল ফাইল ওপেন করতে হলো, সেই সময়ের বাস্তবতা তুলে ধরেই 'সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান'-এর ওপর বাংলাদেশে সর্বপ্রথম নির্মাণ হলো কোনো ডকু-ফিকশন 'ফাইল নম্বর ৬০৬'।  

কী আছে এই 'ফাইল নম্বর ৬০৬' ডকু ফিকশন?
পাকিস্তান স্বাধীনতার মাত্র ৫ মাসের মাথায় ১৯৪৮ সালের ১৩ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকার বর্ধমান হাউজে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের সভায় উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের কেন্দ্রিয় মন্ত্রী আইআই চুন্ডিগড়সহ আব্দুর রব নিশতার, পীরজাদা আব্দুস সাত্তার প্রমুখ। সভায় একটি পুস্তিকা বিলি করা হয়। এই পুস্তিকাটি শেখ মুজিবুর রহমান ও নাঈমুদ্দিন আহমদ কর্তৃক প্রকাশিত। পুস্তিকাটির শিরোনাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তানের দুর্ভাগা জনসাধারণ, কৈফিয়ত দিতে হবে আমাদের দাবি। ’ এই পুস্তিকাকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মতো গোয়েন্দাদের খাতায় নাম ওঠে শেখ মুজিবুর রহমানের। এ পর্যন্তই শেষ হয়নি। অসংখ্য ঐতিহাসিক ঘটনা সৃষ্টি করছিলেন শেষ মুজিবুর রহমান।

চলচ্চিত্রকার শেখ তাজুল ইসলাম তুহিনের কথা:
ফাইল নম্বর ৬০৬ সম্পর্কে পরিচালক প্রকৌশলী শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন বলেন, ‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বইগুলোর প্রথম খণ্ড নিয়ে এই শর্ট ফিল্মটি বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইতিহাসের গবেষকদের গবেষণার তথ্য-উপাত্তের একটি সমৃদ্ধ উৎস হবে। কারণ এতে উন্মোচিত হয়েছে, কীভাবে সদ্য জন্ম নেওয়া পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালিয়েছিল।  

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি একান্ত ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা থাকায় নিজস্ব চেষ্টায় ও সবার ব্যক্তিগত সহযোগিতায় 'সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান'-এর চৌদ্দ খণ্ডের মধ্যে প্রথম খণ্ডটি নিয়ে এই প্রথম একটি ডকু-ফিকশন নির্মাণ করেছি। ভবিষ্যতে সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেলে সবগুলো খণ্ডেরই ডকু-ফিকশন নির্মাণ করে বাংলাদেশে এবং বিশ্বের সব দেশে পৌঁছে দেবো।  

চলচ্চিত্রকারের পরিচিতি: 
শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন একাধারে কবি, সাহিত্যিক, গল্পকথক ও পেশাগতভাবে প্রকৌশলী। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পেশাগত জীবনে একজন প্রকৌশলী এবং প্রকৌশলীদের সর্বোচ্চ পেশাজীবি প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে দুই বার এজিএস নির্বাচিত হন।  

শেখ তাজুল ইসলাম তুহিনের বাবা শেখ রোকন উদ্দিন যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন এবং সেই সময় তিনিই প্রথম বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা করেন প্রথম গান ও কবিতা "তোরা আয় কে দেখবি খুশিতে নতুন চাঁদ আজ উদয় হইয়াছে .."। শেখ তুহিনও বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় নির্মাণ করেন এই ডকু-ফিকশন।

ডকু-ফিকশন ফাইল নম্বর ৬০৬-এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন শাহীন আহমেদ এবং প্রযোজনায় ছিল 'নক্ষত্র'।  

ডকু-ফিকশনটির প্রদর্শনী উদ্বোধনীতে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পরবর্তীতে ইউটিউব ও অনলাইনেও দেখা যাবে ডকু-ফিকশনটি। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এটি দেখানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
এমআইএইচ/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।