ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তেরখাদায় ঘেরপাড়ে সবজি চাষ করে শত পরিবারের দিনবদল

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩
তেরখাদায় ঘেরপাড়ে সবজি চাষ করে শত পরিবারের দিনবদল

খুলনা: ১০ বিঘা ঘেরের আইলে শসা ও অফ সিজনের তরমুজ চাষ করেছেন খুলনার তেরখাদার আজগরা গ্রামের অপূর্ব মল্লিক নামে এক কৃষক। একই গ্রামের রবি বিশ্বাস, সুজিত মালি ও আলী গাজীও ঘেরে মাছের পাশাপাশি পাড়ে সবজি চাষ করে সংসারে সচ্ছলতার দেখা পেয়েছেন।

মাছের ঘেরের বেড়িবাঁধে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ। সমন্বিত মাছ ও সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে তেরখাদার শত শত পরিবার। ফলন ভালো হওয়ায় এলাকার অনেক কৃষক ঘেরের বেড়িবাঁধে সবজি চাষে ঝুঁকছেন।

চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় এ অঞ্চলের অধিকাংশ ঘেরের মালিকই ঘেরের বাঁধে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি সবজির চাষ করে সচ্ছল হচ্ছেন। ঘেরের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আর ঘেরের বাঁধে অফ সিজনের তরমুজ, করলা, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, চিচিঙ্গা, বরবটি, পুঁইশাক ও ধুন্দলসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন তারা।

ভুজুনিয়া গ্রামের শিমুল বলেন, ৩ বিঘা মাছের ঘেরের আইলে করলা ও শসা চাষ করেছি। আর ঘেরে চিংড়ি ও সাদা মাছের চাষ করেছি। অন্য বছরের চেয়ে এবার ভালো দাম পেয়েছি।

আজগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ মেনন রায় বলেন, ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোতে শুধু ঘের আর ঘের। বিশেষ করে আমার ইউনিয়নের ১০ হাজার লোকের মধ্যে ৮০ ভাগ মানুষই ঘেরে মাছ ও ঘেরপাড়ে সবজি চাষ করে ভাগ্য বদল করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের তিন হাজার ঘেরের পাড়ে ৩১২ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালীন সময়ে এ পদ্ধতিতে সবজির আবাদ হচ্ছে। উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে স্থানীয় কৃষকরা লাভবান ও স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

তেরখাদা উপজেলার আজগড়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘেরের বেড়িতে বাঁশ-খুঁটি ও নেটের জাল দিয়ে মাচা বানিয়ে তাতে ফসল ফলাচ্ছেন চাষিরা। উৎপাদিত এসব সবজির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লাউ, শসা, উচ্ছে, শিম, করোলা, চিচিঙ্গা, টমেটো, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া এবং তরমুজ। সেইসঙ্গে ঘেরের পাড় ধরে লাগানো হচ্ছে পুঁইশাকের ডগা। গাছ ভরে ধরেছে ঢ্যাঁড়স। এমন দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। ঘেরের পাড়ে উৎপাদিত এসব শাকসবজি উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ঘেরের পানিতে মাছ চাষ আর পাড়ে সবজি চাষ করে এসব এলাকার কৃষকরা এখন তাদের দিন বদলেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ কপিল দেব বসাক বলেন, তেরখাদার ছয়টি ইউনিয়নের ঘেরের পাড়ে ৩১২ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালীন সবজি আবাদ হচ্ছে। এ এলাকার কৃষকরা এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখেন না। তারা ঘেরের পাড়ে সারা বছর আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে সবজির আবাদ করছেন। এ সবজি বিক্রি করে তারা প্রচুর উপার্জন করছেন। সবজি চাষ করে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো আছেন। তাদের আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। কৃষকরা প্রচুর পরিশ্রম করে এ এলাকায় কৃষিতে বিপ্লব ঘটাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩
এমআরএম/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।