ঢাকা: পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক ইহসানুল করিম হেলালের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) বাদ জোহর গুলশান সোসাইটি মসজিদে তৃতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিমকে রাষ্ট্রীয় সম্মান গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রেস সচিব ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম, বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সাজ্জাদুল হাসান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামসহ বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সাংবাদিক ইহসানুল করিমে কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবির আহমেদ।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, আওয়ামী লীগের পক্ষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের পক্ষে স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) পরিবার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের বাসস ইউনিট, বাসস এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিক পরিষদ, এডিটর্স গিল্ড, চ্যানেল আই পরিবার, সম্প্রীতি বাংলাদেশ, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যাস কমিউনিকেশন মরহুমের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানায়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকাল ৮টায় রাজধানীর এলেনবাড়ীতে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার রাত ৮টার দিকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন রাজধানীর দুটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
ইহসানুল করিম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক এবং রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৪৯ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সাংবাদিকতায় স্নাকত্তোর ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর হয়ে পশ্চিম রণাঙ্গনে অংশ নেন।
ইহসানুল করিম ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি সংবাদ সংস্থার বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের নয়া দিল্লিতে বাসসের ব্যুরো প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর তিনি ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অবসর নেন।
তিনি বাসস থেকে অবসর নেওয়ার পর, একই বছরের ২০ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ১৫ জুন তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে প্রথমে এক বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে তার চুক্তির মেয়াদ দুই বার-তিন বছর করে বাড়ানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৪
এমইউএম/আরএইচ