ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ ভাদ্র ১৪৩১, ৩০ আগস্ট ২০২৪, ২৪ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

গুমের শিকার ডা. জনি ও কলেজছাত্র রেজোয়ানকে ফেরত চান স্বজনরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৪
গুমের শিকার ডা. জনি ও কলেজছাত্র রেজোয়ানকে ফেরত চান স্বজনরা

খুলনা: গুমের শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনি এবং যশোরের বেনাপোলের কলেজছাত্র রেজোয়ান হোসেনকে ফেরত পেতে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ চেয়েছেন স্বজনরা।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) ‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে খুলনায় মানববন্ধন ও সমাবেশে অংশ নিয়ে এ দাবি জানান তারা।

 

খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’।  

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও দিবসের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন করেন অধিকার খুলনার ফোকাল পারসন সাংবাদিক মুহাম্মদ নূরুজ্জামান। পরিচালনা করেন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী কেএম জিয়াউস সাদাত।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে গুমের শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনির বাবা শেখ আব্দুর রাশেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই হিমেলের নেতৃত্বে পুলিশ জনিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর প্রায় ৮ বছরেও তার সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ। ছেলেকে হারিয়ে তাদের সংসার তছনছ হয়ে গেছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বারবার আবেদন করা হলেও সন্তানকে ফেরত দেননি তিনি। ফলে জনির মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের কঠোর শাস্তি এবং জনিকে ফিরিয়ে দিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

গুমের শিকার বেনাপোলের মেধাবী কলেজছাত্র মো. রেজোয়ান হোসেনের বড় ভাই মো. রিপন হোসেন বলেন, তার ভাইকে ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট বেনাপোল থানা পুলিশ আটক করে। পরে ওসি অপূর্ব হাসানের নেতৃত্বে তাকে গুম করা হয়। দীর্ঘ ৮ বছরেও তার সন্ধান মেলেনি। ভাইয়ের সন্ধান না পেয়ে তার বৃদ্ধ মা-বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

মানববন্ধন থেকে দিবসের ঘোষণাপত্রে উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়, গুম মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে এটিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন কর্তৃত্ববাদী সরকার ব্যবহার করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত ও দীর্ঘায়িত করার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ভিন্নমতালম্বী ব্যক্তিদের গুম করেছে। ২০০৯ সাল থেকে দেশে গুম হওয়ার ঘটনা ব্যাপকভাবে শুরু হয়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনগুলোর আগে ও পরে অনেক গুমের ঘটনা ঘটে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এর শিকার হন। মায়ের ডাক এবং অধিকার গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিসহ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে এবং এ কারণে অধিকার এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা শাখার আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (এমইউজে)’র কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রানা, ব্লাস্টের অ্যাডভোকেট অশোক কুমার সাহা, সাতক্ষীরার মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট শেখ আলমগীর আশরাফ, মানবাধিকার কর্মী শেখ আব্দুল হালিম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছায়াবৃক্ষের প্রধান নির্বাহী মাহবুব আলম বাদশা, নারীনেত্রী ইসমত আরা কাকন।  

উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক কাজী মোতাহার রহমান বাবু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের এ এইচ শামিমুজ্জামান, এসএ টিভি’র রকিবুল ইসলাম মতি, সময়ের খবরের আশরাফুল ইসলাম নূর, কালবেলা’র মোহাম্মদ বশির হোসেন, সংযোগ প্রতিদিনের মিশারুল ইসলাম মনির, দীপ্ত টেলিভিশনের ইয়াসিন আরাফাত রুমি, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক এম এ আজিম, মুহাম্মদ বদরুজ্জামান, মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, মো. জামাল হোসেন, মাসুম বিল্লাহ ইমরান, মো. রাজু, অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম, ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান খান, নাদিম হোসেন ও এস এম রেজা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০ , ২০২৪
এমআরএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।