জামালপুর: গত কয়েকদিন ধরে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তে ভারতীয় হাতির উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছে সীমান্তে বসবাসকারী পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানুষ।
গত সপ্তাহ থেকে প্রায় অর্ধ শতাধিক হাতির দল কামালপুর ইউনিয়নের বালিঝুরি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের প্রায় ১ কিলোমিটার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। হাতির তাণ্ডবে ওই ইউনিয়নের সোমনাথপাড়া, গারোপাড়া, টিলাপাড়া, যদুরচর, সাতানীপাড়া ও মৃর্ধাপাড়ার ৬ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের চোখে ঘুম নেই।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতীয় বন্য হাতির পাল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করে। প্রতিবছর হাতির দল সীমান্তে দিয়ে রাতে প্রবেশ করলেও দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের অভ্যন্তরে চলে যায়। কিন্তু এবার হাতিগুলো আর ফেরত যাচ্ছে না। দিনে সোমনাথপাড়া, গঢ়োপাড়া, টিলাপাড়ায় পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান করছে হাতির দল, রাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করছে তারা।
হাতির পায়ের ছাপ। ছবি: বাংলানিউজ
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সারারাত হাতির তাণ্ডবে বালিজুরি গ্রামের ১০ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান নষ্ট হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি বাড়ির ফলজ ও বনজ বৃক্ষেরও ক্ষতি হয়েছে। পরে ভোরে হাতির দল পাহাড়ের চূড়ায় চলে যায়।
এদিকে স্থানীয় বন বিভাগও হাতি তাড়ানোর কাজে বাঁধা দিচ্ছে। বন বিভাগের বাঁধার কারণে ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছর হাতি তাড়ানোর জন্য বৈদ্যুতিক জেনারেটর, পটকা ও আগুন ব্যবহার করেছে স্থানীয়রা কিন্তু এবার সেগুলোও ব্যবহার করতে দিচ্ছে না বন বিভাগ। এমনটি অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে বালিজুরি রেঞ্জের বন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুতিক ফাঁদ ব্যবহার করলে হাতি মারা যায়, সে কারণে বৈদুত্যিক জেনারেটর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে আগুন বা শব্দ করে হাতি তাড়াতে কোনো বাঁধা নেই।
এদিকে হাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে, যারা হাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাদের আর্থিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান এ বন কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জামালপুর জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তি রায় বাংলানিউজকে বলেন, যে এলাকায় হাতিরা অবস্থান করছে সে এলাকা থেকে মানুষদের সরে যেতে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২
জেডএ