মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার সরকারি শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এ কমিটি গঠন করা হয়।
জানা গেছে, কলেজের সংস্কৃত বিভাগের প্রধান প্রভাষক সন্ধ্যা রানী দাসকে আহব্বায়ক করে প্রভাষক বিবেকানন্দ দাশ, নাসরিন খানম, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ রহমান, মো. সালাউদ্দিন, হুমায়ন কবির ও শেখ মাহবুবুল আলমসহ সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে অধ্যক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষকের করা যৌন হয়রানির ঘটনার দুই মাস হতে চললেও কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে ভয়ে ওই ছাত্রী কলেজে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ওই শিক্ষককে এর আগেও পাঁচবার বিভিন্ন কারণে কলেজ থেকে শোকজ করা হয়েছিল। সর্বশেষ এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছিল। যদিও ওই শিক্ষকের দাবি, তার বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই শিক্ষক কলেজের ক্লাস শেষে ক্যাম্পাসেই ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়াতেন। গত ২৪ জুলাই ওই ছাত্রী প্রাইভেট পড়তে গেলে অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে নিয়ে ক্যাম্পাসের ২০৪ নম্বর কক্ষে যান। পড়ানো শেষে ওই ছাত্রীকে আটকে রেখে তিনি যৌন হয়রানি করেন। পরে ওই ছাত্রী কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে বেগম রোকেয়া ছাত্রীনিবাসে চলে যান।
এর পর ওই ছাত্রী শিক্ষকের বিচার চেয়ে ১ আগস্ট অধ্যক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এক মাসের বেশি সময় পর গত ৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) দেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ জাকিয়া সুলতানা। ১৪ সেপ্টেম্বর কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিয়েছেন অভিযুক্ত ওই শিক্ষক। সেখানে তিনি এ ঘটনা পুরোটাই সাজানো এবং তার বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
অধ্যক্ষ জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমাদের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে ওঠায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং ডাকা হয়। সেই মিটিংয়ে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই ওই শিক্ষকের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২
এফআর