ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জুলুমের সব রেকর্ড ভেঙেও সরকারের শেষ রক্ষা হবে না: ফয়জুল করীম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২৪
জুলুমের সব রেকর্ড ভেঙেও সরকারের শেষ রক্ষা হবে না: ফয়জুল করীম

ঢাকা: ক্ষমতায় টিকে থাকতে প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করেও সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।

তিনি বলেছেন, জনতার রুদ্ররোষ ক্রমেই গণবিস্ফোরণে রূপ নিচ্ছে।

আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সব বাহিনী নামানো হয়েছে, থামাতে পারেনি। সব রকম নির্যাতনের পরও আন্দোলন বন্ধ করতে পারেনি। আন্দোলন বাড়ছে, আরও বাড়বে। ইসলামী আন্দোলন এবং সব সহযোগী সংগঠন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই সরকারের পরাজয় না হয়।

শুক্রবার (২ আগস্ট) সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে আইএবি মিলনায়তনে ছাত্র ও যুবকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়জুল করীম এসব কথা বলেন।  

তিনি বলেন, সারাদেশে পুলিশকে গ্রেফতার বাণিজ্যের সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। নিরীহ নিরপরাধ মানুষকে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকার গ্রেফতার বাণিজ্য করা হচ্ছে। এর সঙ্গে পুলিশ ও সরকার দলীয় লোকজন জড়িত। কিন্তু জুলুম-নির্যাতনের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেও সরকারের আখেরে রক্ষা হবে না। সরকারকে গণহত্যার দায় নিয়ে পদত্যাগ করতেই হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদের সভাপতিত্বে এবং ইসলামী যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি মানসুর আহমাদ সাকী ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি মুনতাছির আহমাদের যৌথ সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ুম, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ এসহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের।

ফয়জুল করীম বলেন, ১৯৭১-৭৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনের ইতিহাস তারা বলে না। তখন তারা এক ভয়ঙ্কর শাসন ব্যবস্থা উপহার দিয়েছিল জাতিকে। বাকশাল কায়েম করে জনগণের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের খুনিদের বিচার হলে ২০২৪ সালের খুনি শেখ হাসিনারও বিচার হবে। হাজার হাজার ছাত্র ও বাচ্চা খুন করেছে এই অবৈধ সরকার।  

তিনি বলেন, আমরা নমরুদ, ফেরাউন, শাদ্দাদকে দেখিনি, কিন্তু আমরা শেখ হাসিনাকে দেখেছি কত ভয়ঙ্কর, কত খুনি, কত মিথ্যাবাদী, জালিম। ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সভায় ওবায়দুল কাদেরকে সবাই ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে তিরস্কার করেছে। লজ্জা থাকলে কাদের জাতির সামনে মুখ দেখাতেন না।  

ইসলামী আন্দোলনের এ নেতা বলেন, আমাদের আন্দোলন মজলুমের পক্ষে, জালিমের বিরুদ্ধে। মজলুমের বিজয় হবেই, জালিমের পরাজয় খুব নিকটেই।  

তিনি ছাত্র ও যুবকদের উদ্দেশে বলেন, আগের তুলনায় আরও শক্তি ও সাহস নিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে এই অবৈধ জালিম সরকারের পতন আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে হবে।

মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়েছে। বিশ্ববাসী এই হত্যার ভিডিও দেখেছে, সেখানে পুলিশ তাকে খুব কাছে থেকে গুলি করে হত্যা করে। কিন্তু এই জালিম ও খুনি ১৬ বছরের একটি বাচ্চাকে আবু সাঈদের খুনি হিসেবে গ্রেফতার করেছে। জুলুম ও মিথ্যাচারের একটা সীমা থাকা চাই।
 
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির বলেন, শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে কেন বিদায় নিতে হবে, কে দেশ চালাবে? এই নির্লজ্জ সরকার লজ্জা থাকলে এমন কথা বলতো না। এজন্য খুন ও নির্যাতনের পথে হাঁটছে সরকার।  

তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ প্রমাণ হলে সংবিধান অনুযায়ী সরকারের ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই। শেখ হাসিনা যাদের নিযোগ দিয়েছেন এরা সবাই দুর্নীতিবাজ। শেখ হাসিনার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হলে, তিনি কত কোটি টাকার মালিক? পিয়ন দুর্নীতিবাজ হলে মালিক দুর্নীতিমুক্ত কীভাবে? পুলিশের সাবেক আইজি, সাবেক সেনাপ্রধান, মতিউরসহ সবাই দুর্নীতিবাজ। কাজেই এই সরকারও দুর্নীতিবাজ। তাদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। এই আন্দোলন কেবল কোটার আন্দোলন নয়, এটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলন এখন সরাসরি এসব হত্যার বিচার চায়। ওই সব মন্ত্রী, যারা গুলির নির্দেশ দিয়েছেন, উসকে দিয়েছেন ছাত্রলীগকে, তাদের পদত্যাগ চায় দল থেকে এবং সরকার থেকে। প্রধানমন্ত্রী যাতে সব হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা চান, শিক্ষার্থীরা সেই দাবি করেছেন। এগুলো মানতে হবে।  

এসব নিয়ে সরকারের মধ্যে একধরনের গৃহদাহ শুরু হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন সৈয়দ ফয়জুল করীম।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২৪
টিএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।