ঢাকা: দীর্ঘদিন পর জুন মাসে হতে যাচ্ছে ঢাকা জেলা বিএনপির সম্মেলন, চলছে প্রস্তুতি। সম্মেলন ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা দুই বারের নির্বাচিত সাবেক নবাবগঞ্জ উপজেলার পরিষদ চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক এবার সভাপতি পদে আসতে চান। জানা গেছে, বর্তমান সভাপতি ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন ও খন্দকার আবু আশফাকের মধ্যে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সরাসরি ভোট হলে আরও প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সভাপতি প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৮১ সালে ছাত্রদলে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসি। ১৯৮৬ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের ভিপি ছিলাম ১৯৯০ সালে। ২০০১ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। একই সঙ্গে ২০০৩ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক ছিলাম। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নওয়াবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেও উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করা সঠিক মনে হয়নি বলে মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
তিনি বলেন, আমি এখনও প্রার্থী হইনি। তবে ফরম ছাড়লে প্রার্থী হব। সেই হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের বলতে চাই, আমি দীর্ঘদিন ধরে আপনাদের সঙ্গে কাজ করছি। আপনারা যদি আমার কাজে সন্তষ্ট হন, যোগ্য মনে করলে আমাকে মনোনীত করবেন। আবার আমার চেয়ে যদি অন্য কাউকে বেশি যোগ্য মনে করেন, তাহলে তাকে মনোনীত করবেন।
কাউন্সিল করতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে আবু আশফাক বলেন, সরকার তো এখন পাঁচ/১০ জন বিএনপি কর্মী একত্র হলেই বাধার সৃষ্টি করে। ধারণা করি, কাউন্সিলেও বাধা দেবে। তারপরও এর মধ্যেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এর আগে ঢাকা জেলার সব থানা ও ইউনিটে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি হয়েছে। জেলা কমিটিও হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ঢাকা জেলা বিএনপির সর্বশেষ আংশিক ৫৬ জনের কমিটি হয়। পরে ২০১৮ সালে ২৬৬ জনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়। ওই কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। যিনি এখনও ওই পদে আছেন। একই সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন খন্দকার আবু আশফাক।
এবারের সম্মেলনে মোট ১০টি ইউনিটে এক হাজার ১০ জন কাউন্সিলর তাদের মতামত তুলে ধরবেন। মূলত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সরাসরি ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি পদগুলো সিলেকশনে হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী ও ঢাকা জেলা যুবদলের বর্তমান সভাপতি রেজাউল কবির পলের নাম শোনা যাচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা জেলার ১০টি ইউনিটের কমিটি এরই মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে হয়েছে। জেলা কমিটিও কাউন্সিলের মাধ্যমে হওয়ার কথা রয়েছে। একটি তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছিল, তবে তা এখনো করা যায়নি। আশা করি, জুন মাসের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি হবে।
কারা প্রার্থী হচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এখন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ হয়নি। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর প্রার্থীদের নাম বলা যাবে।
জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, এ মাসের (জুন-২০২২) মধ্যেই সম্মেলন হবে। সভাপতি-সম্পাদক পদে অনেক প্রার্থী আছেন। কাউন্সিলররা যাদের বেছে নেবেন, তারাই পদে আসবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২২
এমএইচ/এসআই