ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

অন্য এক সার্জিকাল স্ট্রাইকে পাকিস্তানিদের বাঁচাচ্ছে ভারত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৬
অন্য এক সার্জিকাল স্ট্রাইকে পাকিস্তানিদের বাঁচাচ্ছে ভারত

কলকাতা: করাচির বাসিন্দা ভুরা সন্তোষের চার বছরের মেয়ে স্বপ্নার হার্টের সমস্যা ধরা পড়েছিলো। কলকাতায় অপারেশন করাতে চেয়েছিলেন এ পাকিস্তানি মেয়ের বাবা।

কিন্তু দিনমজুর এ বাবার সমস্যা ছিলো অর্থের। আর অসহায় বাবা দেখছিলেন চার বছরের মেয়ে ধীরেধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

এ অবস্থায় হাত বাড়িয়ে দেয়, রোটারিক্লাব অব কলকাতা নামে কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সংস্থার সাহায্যে ছোট্ট স্বপ্না এখন সুস্থ। সে ফিরে গেছে তার দেশে পাকিস্তানে।

এ চিত্র ব্যতিক্রমী নয় বরং উল্টোটা। সীমান্তে উত্তেজনা থাকলেও পাকিস্তানি রোগীদের জীবন বাঁচাতে ভারতের একাধিক শহরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বহুচিকিৎসক। যেখানে সীমান্তের উত্তেজনা ছাড়িয়ে মানবিক মুখ ফুটে ওঠেছে প্রতিটি ঘটনায়।

এদিকে, যখন সীমান্তে গুলি বিনিময়য়ের মতো ঘটনা ঘটছে, ঠিক তখন ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চলছে পাকিস্তানিদের চিকিৎসা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতেও প্রতিদিনই পাকিস্তান থেকে যোগাযোগ করছেন অনেক রোগীর পরিবার। ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে এখন ভর্তি রয়েছেন অনেক পাকিস্তানি নাগরিক। এর মধ্যে অপারেশন রোগী ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রয়েছে অনেক রোগী। কেউবা সুস্থ হয়ে ছুটি পেয়ে ফিরে গিয়েছেন নিজ দেশে।
 
‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’-এই শব্দটি বর্তমানে অনেক বেশি আলোচনায় রয়েছে ভারতে। তবে সীমান্তে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ হলেও ভারতের চিকিৎসকরা প্রতিদিনই অন্য এক ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ করছেন পাকিস্তানি রোগীদের। যার ফলে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে অনেক পাকিস্তানি নাগরিক। ফিরে পাচ্ছেন স্বাভাবিক জীবন-যাপন।

জানা গেছে, পাকিস্তান থেকে প্রতিবছর প্রায় এক হাজার নতুন রোগী আসেন ভারতে। চিকিৎসার জন্য পাকিস্তানি বেশি ভাগ রোগী ভীড় জম‍ান দিল্লিতে। ২০১৫ সালে দিল্লির ‘ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো’ হাসপাতালে ১শ ১১জন পাকিস্তানি রোগীর সফল লিভার প্রতিস্থাপন করা হয়েছিলো।

আরও জানা যায়, বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মোট আটজন পাকিস্তানি। শুধু দিল্লী নয় চেন্নাই, কলকাতা, মুম্বাইয়ের হাসপাতালে রয়েছে পাকিস্তানি রোগী।

হাসপাতালগুলোর সূত্রে জানা গেছে, আসা-যাওয়ার সমস্যা থাকায় রোগীদের সঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখেন চিকিৎসকরা।

বর্তমানে কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে হার্ট ও ফুসফুস প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে লাহোরের এক তরুণ।

চার বছরের স্বপ্নার প্রসঙ্গ জানিয়ে রোটারিক্লাব অব কলকাতা মহানগরের সদস্য শেখর মেহেতা জানিয়েছেন, পাকিস্তানি অনেক শিশুর হার্টের অপারেশন রোটারিক্লাব অব কলকাতা বিনামূল্যে করিয়েছে। আগামী দিনেও প্রাণ বাঁচাতে এ রকম কাজ করবে বলে জানিয়েছে ‘রোটারিক্লাব অব কলকাতা’।

বাংলাদেশ সময়: ০৩২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৬
ভিএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।