ঢাকা: জাতীয় সংসদের অর্ধেক আসনের নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার চায় বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (বিটিএফ)। এছাড়াও বিশেষ মনিটরিং সেল গঠনসহ ১১টি প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে বসে এ প্রস্তাব দেয় তরিকত ফেডারেশন।
সংলাপে দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বাশার মাইজভাণ্ডারির নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব ড. সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী লিখিত আকারে প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করেন—
১) অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সারা দেশে একদিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ ব্যবস্থার ব্যাঘাত ঘটে তাই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দুই বা তিন ধাপে অনুষ্ঠিত করার প্রস্তাব করছি। যেন প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যদের নিয়োগ করা যায়।
২) রাজনীতির নামে কোনো অপশক্তি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ যাতে বিঘ্নিত করতে না পারে এবং সর্বস্তরের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান কল্পে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করা।
৩) কোনো রাজনৈতিক দলের গঠণতন্ত্র, আদর্শ, উদ্দেশ্য ও ঘোষণাপত্র যদি বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় সে দলের নিবন্ধন বাতিল ও নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৪) ইভিএম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা সৃষ্টির জন্য আগামীতে অনুষ্ঠিতব্য সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচন যেমন, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সমূহ (১০০%) শতভাগ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএম এর মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা করে সাধারণ জনগণের নিকট ইভিএম ব্যবহারে অভ্যস্থ করা।
৫) জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ইভিএম সর্ম্পকে ভোটারদের মাঝে সঠিক ধারণা নেই। রাজনৈতিক দল গুলো ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে একমত নয়, তাই শুধুমাত্র আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫০ আসনে ইভিএম এবং ১৫০ আসনে ব্যালেটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করার প্রস্তাব করছি।
৬) ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের ব্যাপক পরিচিতি আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করার জন্য ইউনিয়ন, উপজেলা, থানা ও জেলা পর্যায়ে (ক্যাম্পিং) ব্যাপক প্রচারণা ও প্রদর্শনী ব্যবস্থা করার প্রস্তাব করছি। এ ব্যপারে প্রিন্ট ও ইলোক্ট্রনিক্স মিডিয়া প্রচার প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে।
৭) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ২৫ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৮) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে আগত রোহিঙ্গারা যাতে কোনভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা।
৯) কালো টাকার মালিকসহ দুর্বৃত্তায়নের সাথে জড়িতদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না দেওয়ার ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগসহ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১০) নির্বাচনী তফসিল ঘোষাণার দিন থেকে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত জনগণের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানি ক্ষেত্রে মালামাল পরিবহনে স্থল ও নৌবন্দরের সাথে সংযুক্ত সড়কসমূহে সভা-সমাবেশ ইত্যাদির নামে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও যোগাযোগ বন্ধের বিরুদ্ধে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১১) প্রবাসে অবস্থানরত আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রয়েছে বিশেষ অবদান। অবস্থানগত কারণে নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। তাই বিদেশে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটগ্রহণের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২২
ইইউডি/এমজেএফ