রাজশাহী: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করতে হলে আগে স্মার্ট গভর্নমেন্ট গঠন করতে হবে। আর স্মার্ট গভর্নমেন্ট গঠন করতে হলে প্রকৃত সময়ভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত দরকার।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে পরিসংখ্যান বিভাগের হীরকজয়ন্তী ও তৃতীয় পুনর্মিলনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১০-২১ সালে রূপকল্পে বলা হয়েছে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে, হয়েছে। ২০১৩-১৪ তে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো, সেটাও হয়েছি। রূপকল্পে বলা হয়েছে আমাদের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলার হবে, সেখানে আমরা ২ হাজার ৩৭০ ডলার করেছি। ২০১০ সালের প্রথম দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় আমরা ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা বলেছিলাম, আমরা তা করেছি। আমরা অনেকগুলো প্রকল্প নিয়েছি তার অধিকাংশ অর্জন করতে পেরেছি। এ সময়ে বাংলাদেশ দুটি মাইলফলক সফলতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের ৫০তম জন্মজয়ন্তীতে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। ২০১৮ ও ২০২১ সাল দুবার উন্নয়নশীল দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি, ২০২৬ সালে সেটা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, রূপকল্পে শতভাগ বিদ্যুতের কথা বলেছি, আমরা সেটা দিয়েছি। বাংলাদেশ উন্নত ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। মাথাপিছু আয় ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি। নারী শিক্ষা ও নারী কর্মক্ষেত্রে এদের অনেক আগেই পেছনে ফেলেছি। আমাদের ১৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের ৩৬ দশমিক তিন শতাংশ সরকারি-বেসরকারি কর্মে নিয়োজিত আছে। আমরা সব ক্ষেত্রে ভারত-পাকিস্তান থেকে এগিয়ে। এভাবে সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে গত ১৪ বছরে। সেগুলো হয়েছে পরিকল্পনা মাফিক।
ড. শামসুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও তত্ত্বাবধানে পরিকল্পনাগুলো প্রণীত হয়েছে। ২০২১-২০৪১ রূপকল্পে আমাদের লক্ষ্য আমরা সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করবো, উন্নত দেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি হবে। জলবায়ু প্রভাব মোকাবিলা করার জন্য আমদের একশ বছরের পরিকল্পনা আছে।
পরিসংখ্যানের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনার মূল উপকরণ হলো তথ্য। তথ্য ছাড়া পরিকল্পনা কখনো পূর্ণাঙ্গতা পেতে পারে না। আমরা যে পরিকল্পনা করি তার গতিধারা কী হবে তা ঠিক করা অর্থনীতিবিদের সঙ্গে সঙ্গে পরিসংখ্যানবিদদের মূল দায়িত্ব। এগুলো পরিসংখ্যানভিত্তিক করতে হয়। যে দেশ যত বেশি উন্নত, সে দেশের তথ্য ব্যবস্থাপনা তত বেশি উন্নত।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে পাস হওয়া পরিসংখ্যান আইন অনুসারে জাতীয় তথ্য-উপাত্তের সংস্থা হবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বর্তমান যুগ মুক্ত ডেটার যুগ। দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে ত্রৈ-মাসিক ভিত্তিতে জিডিপি প্রকাশ করা হয়। সামনের অর্থবছরে তা বাস্তবায়ন হবে মর্মে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রাবি উপাচার্য ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- রোসার সভাপতি ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন, রাবির উপ-উপাচার্য সুলতানুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- রাবির পরিসংখ্যান বিভাগের হীরকজয়ন্তী ও তৃতীয় পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. এম. ছায়েদুর রহমান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, পরিসংখ্যান বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রতিমন্ত্রী পরিসংখ্যান বিভাগের জার্নালের মোড়ক উন্মোচন এবং প্রফেসর মুকতার মোহাম্মদ আলীর ফান্ড থেকে মেধাবী ৪৮ জন শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপের চেক দেন। তিনি এ সময় ৭৬টি একাডেমিক পোস্টার প্রদর্শনী ও প্রফেসর মুকতার মোহাম্মদ আলী ল্যাব উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩
এসএস/আরবি