ঢাকা: দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হলে ডিজিটালাইজেশনে যাওয়া ছাড়া বিকল্প পথ খোলা নেই বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেছেন, স্মার্ট ও ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা করা গেলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উন্নতমানের সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার খাতের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) আয়োজিত ১৭তম ‘বেসিস সফটএক্সপো’ আয়োজনের শেষ দিনে এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
‘স্বাস্থ্যসেবায় এআই, টেলিমেডিসিন এবং স্মার্ট হেলথ কেয়ার’ শিরোনামের ওই গোলটেবিল বৈঠকে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্যসেবায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহারসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসক, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. ফাতেমাআশরাফ।
তিনি বলেন, সুস্থ থাকতে হলে স্বাস্থ্য সম্পর্কে তথ্য থাকতে হবে। আর এই তথ্য বিশ্লেষণ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি ব্যাবহার করতে হবে। একটি মাল্টি ডিসিপ্লিনারি টেকনিক্যাল কমিটি করা দরকার, যারা স্মার্ট হেলথ কেয়ার ও চিকিৎসায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি ব্যাবহার সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করবে।
হ্যালো ডক্টরের প্রতিষ্ঠাতা ফোরকান হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ এখন হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার ওয়্যারেবল ডিভাইস। কেননা আমরা এখন চাইলেই প্রতিদিন এসবের পরীক্ষা করতে পারবো না। এতো টাকাও অনেক পরিবার খরচ করতে পারবে না। কিন্তু আমাদের ওয়্যারেবল ডিভাইস অনেকটাই এ খরচ কমিয়ে আনবে। ’
‘ডিজিটাল হেলথ কেয়ারের উন্নয়নে আমাদের সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং অনেক হেলথ কেয়ার প্রতিষ্ঠান চলে এসেছে। সরকার কাজ করেছে, আমাদের সবার এখন মিলে একটা প্ল্যাটফর্মে এসে সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। ’
তিনি জানান, চিকিৎসকদের সিরিয়াল অনলাইনে করতেই হবে। এটা ডিজিটালাইজেশন করা গেলে দেখা যাবে একটা নিয়মের মধ্যে আসবে। এআইয়ের আগেও কিছু কাজ করার আছে। সেগুলো নিয়ে প্রস্তুত কিনা সেটাও দেখতে হবে। অর্থাৎ সেবাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে অটোমেশন করতে হবে।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন নওয়াবগঞ্জ উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট মুস্তাফশিরা মৌসুমী। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন বিষয়ে রিমাইন্ডার দেওয়া যেমন, টিকা, পুষ্টিহীনদের খাবারসহ বিভিন্ন বিষয়ে রিমাইন্ডার দেওয়া যেতে পারে। এটা করতে পারলে কেউ আর সেসব নিতে ভুলে যাবে না। টেলিমেডিসিন সার্ভিস চালু করলে অনেক খরচ সাশ্রয় হবে। ’
আইসিডিডিআর’বির গবেষক ড. তারজীর আহমেদ শুভ জানান, তিনি নিজেও স্মার্ট হেলথ কেয়ারের সুবিধাভোগী। তাই খুব সহজেই স্বাস্থ্যসেবা পেতে স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার বাড়াতে হবে। তবে সেজন্য আমাদের আগে প্রস্তুত করতে হবে।
ডিআরআরএ’র নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমরা যে কাজ করছি সেখানে এআই খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমরা এখনও একটি সমস্যার সম্মুখীন হই তা হলো স্বাস্থ্যসেবার ডিজিটালাইজেশন। সবকিছু এখনও অটোমেশন না হওয়ায় তা থেকে আমরা পুরো সুবিধা নিতে পারছি না। তাই স্বাস্থ্যসেবা পেতে প্রথম যে কাজটি তা হলো এই খাতের সম্পূর্ণরূপে অটোমেশন করা। ’
বৈঠকে এই সেবার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন অংশগ্রহণকারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
এমআইএইচ/এমএইচএস