ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

টাঙ্গাইলে ২৭ মৃত ব্যক্তি জীবিত, দুইশ জনকে জীবিত করার চেষ্টা!

সুমন কুমার রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২৩
টাঙ্গাইলে ২৭ মৃত ব্যক্তি জীবিত, দুইশ জনকে জীবিত করার চেষ্টা!

টাঙ্গাইল: জেলার গোপালপুরে ২০০ জন মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে ২৭ জনকে জীবিত করা হয়েছে।

তবে এমন ঘটনা বাস্তবে নয়।

গোপালপুর উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে জীবিত ২৫০ জন মানুষকে মৃত হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। পরে পুনরায় হালনাগাদ করার সময় এমন ত্রুটির চিত্র ওঠে এসেছে। এদিকে, এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী থেকে শুরু স্থানীয়রা।

গোপালপুর নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, বছরখানেক আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য দেড় শতাধিক মাঠকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা সবাই ছিলেন স্কুল শিক্ষক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেছিলেন তারা। তাদের কাজের নিয়মাবলী শিখিয়ে দেওয়া হলেও তারা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। ফলে জীবিতরা মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের নিতাই চন্দ্র দাসের স্ত্রী সাবিত্রী রানী অভিযোগ করেন, গত বছর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় তাকে মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত রোববার (১৯ মার্চ) মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে গিয়ে দেখেন ডাটাবেজে তাকে মৃত দেখাচ্ছে।

পরে নির্বাচন অফিসে গেলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জীবিত থাকার সনদপত্রসহ আবেদন করতে বলা হয়। পরে তিনি ধোপাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে পরদিন ২০ মার্চ এ মর্মে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করেন। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবিত্রী রানী মারা যাননি। তিনি সশরীরে ইউপি অফিসে হাজিরা হয়ে প্রমাণ করেছেন যে তিনি জীবিত রয়েছেন। অতএব তিনি বেঁচে নেই, এমন ভুয়া তথ্য সংশোধন করে তাকে হয়রানি থেকে মুক্ত করা হোক।

পৌরসভার গাংগাপাড়া গ্রামের আমান আলীর ছেলে শাফিকুল ইসলাম, জোত বিষ্ণুপুর গ্রামের নিতাই দাসের ছেলে দীপক দাসসহ ২৭ জনকে মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় স্কুল-কলেজে সন্তানের ভর্তি, বয়স্ক ভাতার টাকা ওঠানো, হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা এবং ব্যাংকের সেবা থেকে ছয় মাস ধরে বঞ্চিত রয়েছেন। অনেকেই ভাতা বা ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা তুলতে না পেরে হয়রানির শিকার হয়েছেন। পরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিশেষ ফরমে আবেদন করে মৃত তালিকা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করতে সক্ষম হন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান জানান, মাঠকর্মীদের সন্তোষজনক সম্মানী ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অথচ কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২৫০ জন জীবিত মানুষকে মৃত দেখানো হয়েছে। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ মৃতদের জীবিত করতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে।

নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিনই সেই 'মৃত'রা অফিসে আসছেন। আর আমরা প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের জীবিত করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলে এসব মাঠকর্মীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনে মামলা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।