ঢাকা, শনিবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আসামি হয়েও চাকরিতে বহাল উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩
আসামি হয়েও চাকরিতে বহাল উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা!

লালমনিরহাট: চাচাত ভাইকে কুপিয়ে জখমের মামলায় অভিযুক্ত হয়েও চাকরিতে বহাল রয়েছেন ইয়ামিন চৌধুরী তুহিন (৪৩) নামে এক উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে মামলা হলে তাকে বরখাস্ত করার নিয়ম থাকলেও দীর্ঘ এক মাসেও তা করা হয়নি।

উল্টো বাদীকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়ামিন চৌধুরী তুহিন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পশ্চিম ভেলাবাড়ি গ্রামের এমদাদুল হক চৌধুরীর ছেলে। তিনি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক কর্মকর্তা চাচা এমাদুল হকের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়ামিন চৌধুরী তুহিন গংদের। এরই জেরে গত ১৬ এপ্রিল কীটনাশক স্প্রে করে এমদাদুল হকের বেশ কিছু কলা ও আম গাছের চারা নষ্ট করেন তুহিন। এসময় এমাদুল হকের ছেলে সাইফুল হক শামীম বাধা দিতে গেলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে তুহিন গংরা।

শামীমের চিৎকারে তার মা সালেহা বেগম ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও বেধড়ক পিটিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের মা- ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় ওই দিন আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে টাকা আর ক্ষমতার জোরে সেই অভিযোগ আলোর মুখ দেখেনি। অবশেষে গত ৮ মে সালেহা বেগম বাদী হয়ে ইয়ামিন চৌধুরী তুহিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে তিন দিন পর ১১ মে নিয়মিত মামলা (১৬) হিসেবে নথিভুক্ত করে আদিতমারী থানা পুলিশ।

সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে মামলা হলে তার তদারকি কর্মকর্তাকে বিষয়টা অবগত করে সাময়িক বরখাস্ত করার নিয়ম থাকলেও দীর্ঘ এক মাসেও সেই নথি পাঠায়নি পুলিশ। ফলে চাকরিতেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন ইয়ামিন চৌধুরী তুহিন।

অপরদিকে মামলাটি তুলে নিতে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন বলে বাদীর অভিযোগ। মামলার বাদী সালেহা বেগম বলেন, টাকা আর ক্ষমতার জোরে তারা অনেক কিছুই করছে এলাকায়। কেউ কিছুই করতে পারেনি। মামলা তুলে না নিলে আমার একমাত্র ছেলেকে গুম করার হুমকি দিচ্ছে তুহিন। এসব বলেও কোনো প্রতিকার পাইনি পুলিশের কাছে।

অভিযুক্ত ইয়ামিন চৌধুরী তুহিন বাংলানিউজকে বলেন, আমার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল আমি সমঝোতা করে দিয়েছিলাম। উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলা তার গতিতে চলবে বরখাস্ত কেন করবে?

আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, মামলাটি তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তবে তার কর্মস্থলে মামলার নথি পাঠানো হবে। আপাতত নথি পাঠানো হয়নি তাই তার তদারকি কর্মকর্তা মামলার বিষয়টি জানেন না।

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ সাইফুল আবেদীন বাংলানিউজকে বলেন, ফৌজদারি অপরাধে মামলা হলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে হয়। তবে মামলার বিষয়টি অজানা থাকায় ইয়ামিন চৌধুরী তুহিনকে বরখাস্ত করা হয়নি। মামলার নথি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।