মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আকুবপুর নামক স্থানে সড়কে গাছ ফেলে ফের ঘণ্টাব্যাপী  গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (২ নভেম্বর ) ভোর সাড়ে তিনটার দিকে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী উপজেলার আকুবপুর নামক স্থানে এ গণডাকাতির ঘটনা ঘটে।

ডাকাতদল সড়কের ওপর গাছ ফেলে শ্যামলী পরিবহনের একটি নৈশকোচ, কয়েকটি ট্রাকসহ ১২টি যানবাহনে ডাকাতি করে।

এ সময় ডাকাত দলের হামলায় ট্রাকচালক মুজাহিদুল ইসলাম (২৮) ও হেলপার হাসান আলী (২৫) গুরুতর জখম হয়েছেন। এ সময় ডাকাতদের হাত থেকে বাঁচতে পালাতে গিয়ে একটি ট্রাক পার্শ্ববর্তী খাদে উল্টে পড়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস, মালবাহী তিনটি ট্রাক, একটি মাইক্রোবাস ১০-১২টি আলগামনসহ (শ্যালো ইঞ্জিন চালিত গাড়ি) রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ডাকাত দলের হাত থেকে রেহাই পাইনি।

এ সময় শ্যামলী পরিবহন, ৩টি ট্রাক, একটি মাইক্রোবাসসহ আলগামনের যাত্রী ও চালকদের কাছ থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায় ডাকাতরা।

পাথরবাহী ট্রাকের হেলপার হাসান আলী জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকা থেকে পাথর নিয়ে সন্ধ্যায় গাংনী উপজেলার বামন্দীর উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ট্রাকটি রাত সোয়া তিনটার দিকে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের আকুপপুর চেকপোস্ট এলাকা ছেড়ে ১ থেকে দেড় কিলোমিটার সামনে পৌঁছালে আগে থেকেই ওত পেতে থাকা ডাকাত দলের সদস্যরা সড়কের ওপরে দুটি গাছ ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।

এ সময় একটি ট্রাক ডাকাতের কবল থেকে বাঁচতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। সড়কের গাড়ি থামিয়ে গণডাকাতি শুরু হয়েছে বুঝতে পেরে ট্রাক থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করলে ডাকাত দলের সদস্যরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হেলপারের বাম হাতে ও চালকের ডান হাতে কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।  ডাকাতরা ঘণ্টাব্যাপী পরিবহনের যাত্রী ও গাড়ির স্টাফদের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়।

ডাকাতির সময় যাত্রীরা পুলিশের সহায়তা চেয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে আধাঘণ্টা পর পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তার আগেই ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

একই কথা জানান ট্রাক ডাইভার আলালউদ্দিন।

যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে আহত অবস্থায় ট্রাকের চালক হেলপারকে উদ্ধার করে প্রথমে বামন্দীর একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন, ডাকাতির ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ডাকাত আটকের জন্য পুলিশের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ডাকাত দলের সদস্যদের চিহ্নিত করে আটক করা হবে।

গত ৩ অক্টোবর  দিবাগত রাতে রাতে আকুবপুর পুলিশ চেকপোস্ট এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে একই কায়দায় গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। স্থানীয়রা পুলিশের তৎতপরতা চেয়ে জেলা ও উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় বারবার বিষয়টি উত্থাপন করলেও পুলিশ তেমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ফের ডাকাতির ঘটনা ঘটলো।

মেহেরপুর জেলা জুড়ে চলছে ডাকাত আতঙ্ক। সন্ধ্যা হলেই মানুষ রাস্তায় চলাচল করতে ভয় পাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২৪
জেএইচ