ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ পৌষ ১৪৩১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শেখ হাসিনার সেই ‘৪০০ কোটির’ পিয়নের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
শেখ হাসিনার সেই ‘৪০০ কোটির’ পিয়নের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলোচিত ‘৪০০ কোটি টাকার মালিক’ ব্যক্তিগত সহকারী (পিয়ন) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রীর কামরুন নাহারের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়।

দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আসামি জাহাঙ্গীর আলম স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ১৮ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ৮৮২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করায় এবং তিনি ও তার মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ ভোগ করার মানসে আটটি ব্যাংকের ২৩টি হিসাবে সর্বমোট ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা/ক্রেডিট ও জমাকৃত ওই অর্থ বিভিন্ন মাধ্যমে উত্তোলন বা স্থানান্তর করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন।

অনুসন্ধানকালে আরও দেখা যায়, মো. জাহাঙ্গীর আলম উপরোক্ত অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে তার নিজ নামীয় ও তায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলেছেন। তার আটটি ব্যাংকের ২৩ ও হিসাবে সর্বমোট ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা এবং ৬২৪ কোটি ৬০ লাখ ১৫ হাজার ৬৭১ টাকা উত্তোলিত হয়েছে। যা দুদকের অনুসন্ধানে সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।

অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে তার হিসাবে জমা হওয়ার পর তিনি তা বিভিন্ন পন্থায় স্থানান্তর করেছেন। যার মধ্যে মো. জাহাঙ্গীর আলম তার মালিকানাধীন স্কাই রি এরেঞ্জ নামে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি চলতি হিসাবে শুধু ২০২৪ সালের (প্রথম ৫ মাসে) ৮৩ দিনে মোট ১৭৮ কোটি টাকা জমা এবং ১৭৮ কোটি ৯৩ টাকা উত্তোলন/ফান্ড ট্রান্সফার করেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন তীব্র হওয়ার আগের দিন গত ১৪ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে পিএসসির এক গাড়িচালক কিভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হলেন তা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করা হয়।

এর জবাবে শেখ হাসিনা তখন বলেন, ‘আমার বাসার একজন পিয়ন ছিল, সেও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক! হেলিকপ্টার ছাড়া নাকি চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে। খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। ’

এরপর আলোচনায় আসেন জাহাঙ্গীর আলম। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের এই দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে দেশজুড়ে নানা সমালোচনা হতে থাকে। সরকার তখন তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। জব্দ করা হয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। পরে জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলম পরিবারসহ আমেরিকায় পালিয়েছেন।

এদিকে অন্য একটি মামলা আসামি করা হয় মো. জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী কামরুন নাহারকে। যেখানে বলা হয়, ছয় কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদ ভোগ দখলে রাখার মাধ্যমে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
এসএমএকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।