ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পচে গেছে খালের পানি, সেচ নিয়ে চিন্তায় কৃষকেরা

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২
পচে গেছে খালের পানি, সেচ নিয়ে চিন্তায় কৃষকেরা

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে কৃষকরা সেচ নিয়ে সংকটে পড়েছেন। কারণ ২২ কিলোমিটার পঁচানালা খালটির পানি দূষিত হয়ে পড়েছে।

পচে গেছে এর পানি। নর্দমার পানি ও মিল-কারখানার বর্জ্যে খালের পানি কালো হয়ে পড়েছে। ফলে ৫০০ হেক্টর জমিতে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে সেচ দেওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।  

পৌরসভার ড্রেন-নর্দমার নোংরা পানি ও পয়:বর্জ্যের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে চিঠি দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্ত প্রতিকার মিলছে না।

সরেজমিনে উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নে পাঠানপাড়া স্লুইস গেট এলাকায় গেলে সাবেক ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান খাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, গত বছরও আমরা পঁচানালার পানি সেচ কাজে ব্যবহার করেছি। এবার এর পানি চরম দূষিত হয়ে পড়েছে। পুরো পানি কালো হয়ে পড়েছে। দূষিত পানি খেতে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সৈয়দপুর বিভাগ জানায়, ১৮২২ সালে তৎকালীন জমিদার পচা সরকার এই জনপদের জলাবদ্ধতা নিরসনে পঁচানালা খালটি খনন করেন। পরে পাকিস্তান আমলে অধুনালুপ্ত ওয়াপদা কয়েক দফায় খালটি সম্প্রসারণ করে। তা কৃষি জমির সেচ প্রদানের জন্য ৫০০ হেক্টর জমি আওতা নির্ধারণ করে।

শহরের উত্তর অংশ সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কয়া বিল থেকে পঁচানালার উৎপত্তি। এরপর সৈয়দপুর পৌর এলাকার ভেতর দিয়ে দক্ষিণে ২২ কিলোমিটার ঘুরে তা পতিত হয়েছে চিকলি নদীতে। খালটি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও সারাবছর কৃষি জমিতে সেচ কাজে ব্যবহার হয় পঁচানালার পানি। এলাকার মানুষ মাছ ধরেও জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সৈয়দপুর পৌর এলাকার কিছু কৃষি জমি বোতলাগাড়ি, কামারপুকুর ও বাঙালিপুর ইউনিয়নের সন্নিবেশিত এলাকার ৫০০ হেক্টর জমি পঁচানালার সেচ সুবিধা পেয়ে থাকে। বিশেষ করে ইরি-বোরো সহ শুকনো মৌসুমে খালটির পানি ব্যাপকহারে ব্যবহার হয়।

একই সূত্র মতে, সৈয়দপুর পৌরসভায় প্রায় চার লাখ লোকের বসবাস। বিশাল আয়তনের এ পৌরসভায় পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা বেশ নাজুক। পৌরসভার সকল নর্দমার পানি পঁচানালার খালে ফেলা হচ্ছে। ফলে দূষিত হয়ে পড়ছে খালের পানি। মরে যাচ্ছে মাছ ও জলজ প্রাণী।

সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণকমল সরকার জানান, পঁচানালার পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খাল এলাকার কৃষকরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তিস্তা সেচ ক্যানেলের পানি এনে পঁচানালার পানি শোধনের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্ত তাতেও কাজ হচ্ছে না। পরে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আমরা সৈয়দপুর পৌরসভাকে চিঠি দিয়েছি। চিঠিতে বলা হয়েছে পঁচানালায় যেন নোংরা পানি ফেলা না হয়।

এ নিয়ে কথা হয় সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, পৌরসভার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আধুনিক বর্জ্য শোধনাগার গড়ে তুলছে। এটি চালু হলে পঁচানালায় আর নর্দমার পানি ফেলা হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।