ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

দেশবাসীর দোয়ায় আমরা ফিরে আসতে পেরেছি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২২
দেশবাসীর দোয়ায় আমরা ফিরে আসতে পেরেছি

ঢাকা: অনেক বড় বড় দেশের ক্রুরা সেখানে আটকা আছেন। তারা এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি।

আমাদের বাংলাদেশ খুব ছোট দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমাদের কূটনৈতিকরা অনেক পরিশ্রম ও চেষ্টা করে আমাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন।

বুধবার (০৯ মার্চ) দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে সাংবাদিকদের কথাগুলো বলছিলেন রুশ সেনা অভিযানের মুখে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আটকে পড়া ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের মাস্টার জি এম নূরে আলম।

ওই জাহাজটিতে তিনিসহ মোট ২৯ জন নাবিক ছিলেন। তাদের মধ্যে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মৃত্যু হয়।

ফিরে আসা এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের মাস্টার জি এম নূরে আলম বলেন, আমরা সকলেই আনন্দিত সুস্থভাবে দেশ ফিরতে পেরেছি। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনায় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ও পোল্যান্ড, রোমানিয়ায়, অস্ট্রিয়ার দূতাবাস কঠোর পরিশ্রম করেন। আমরা এত দ্রুত দেশে ফিরতে পারবো কিনা তা ছিল আমাদের জন্য অকল্পনীয়।

তিনি বলেন, অত্যন্ত গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি আমাদের কলিগ ও থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের মৃত্যুতে। তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তার মরদেহ হিমঘরে রেখে এসেছি।

ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে হামলার ঘটনায় প্রসঙ্গে জি এম নূরে আলম বলেন, আমরা নিয়মিত ডিউটিতে ছিলাম। বিকেলে যখন আ্যটাক হয়, তখন জাহাজের ব্রিজে আগুন লেগে গিয়েছিল। এরপর আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি।

দেশবাসী আমাদের জন্য অনেক দোয়া করেছেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে বিভিন্ন পরামর্শ ও সাহস দিয়েছেন। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীও ফোন করে আমাদেরকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নেন৷

আমরা যেখানে দেখেছি প্রায় ৬০ কিলোমিটার হেঁটে হেঁটে রিফিউজিরা সীমান্ত অতিক্রম করছে। কিন্তু আমাদের হেঁটে পার হতে হয়নি।

যেদিন থেকে যুদ্ধ শুরু হয়, সেদিন সকাল থেকেই চ্যানেল বন্ধ হয়ে যায়। সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না বলেও জানান জাহাজের মাস্টার।

এর আগে, ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ২৯ জন নাবিক নিয়ে আটকা পড়েছিল ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এই জাহাজটি ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছে। জাহাজটি ইউক্রেন থেকে সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার পর আর ফিরতে পারেনি। ২ মার্চ ইউক্রেনে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। পরদিন ৩ মার্চ অক্ষত অবস্থায় জাহাজটি থেকে ২৮ নাবিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে তাদের নিরাপদ বাঙ্কারে রাখা হয়। সেখান থেকে তাদের প্রথমে মলদোভা, পরে রোমানিয়া নিয়ে আসা হয়।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রাত পৌনে দুইটায় রোমানিয়া থেকে ২৮ নাবিক টার্কিস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে রওনা দেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টায় তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২২
এসজেএ/এসআইএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।