ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

একুশ দিনে ২০ চুরি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২২
একুশ দিনে ২০ চুরি চুরির পর দোকান পরিদর্শন করেন পুলিশ সদস্যরা

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় ২১ দিনে ২০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিকের দুটি মোটরসাইকেলসহ রয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান-বাসাবাড়িতে নগদ অর্থ-স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনাও।

এদিকে প্রায় প্রতিদিনই চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন ও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। এ অবস্থায় উপজেলা মাসিক সমন্বয় কমিটিতে চুরি বন্ধ করতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার (৩০ মে) দিনগত মধ্যরাতে উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা দৈনিক আমাদের সময়ের স্থানীয় প্রতিনিধি রাজু সরকারের ঘরের বারান্দার গ্রিল কেটে ১টি পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে সটকে পরে চোরের দল। রাজধানীতে অবস্থান করায় মঙ্গলবার (৩১ মে) সকালে বিষয়টি জানতে পারেন তিনি।

এর আগে সোমবার উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবুর রহমানের মোটরসাইকেল চুরি হয়।

এদিকে গত ১৪ মের পর থেকে কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের বালাসীঘাটে একটি মুদি দোকান, হোসেনপুর গ্রামের সুরুজ আলীর একমাত্র সম্বল একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, চন্দিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ১৩টি সেচ পাম্প, রেলগেট এলাকার নুরুল আমিনের একটি গরুসহ বাড়ির বিভিন্ন মালামাল, একাডেমি বাজারের রানু কসমেটিকসের তালা ভেঙে নগদ প্রায় ৪৫ হাজার টাকা এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের দামি কসমেটিকস চুরি হয়।

এছাড়া থানা সংলগ্ন নাপিতের হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিউবওয়েল চুরির ঘটনা ঘটেছে। ২৪ মে রাতে উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের কর্তিকুড়া এলাকায় একটি মুদি দোকানে মালামাল চুরির সময় জনতা হাতে-নাতে দুই চোরকে আটক করেন। পরে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তাদের কাছ থেকে পুলিশ তালা কাটার মেশিন, প্লাসসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করে।

দোকানের  তালা ভেঙে দামি জিনিসপত্র নিয়ে গেছে চোরেরা

সংবাদকর্মী রাজু সরকার বলেন, ‘আমি বিশেষ কাজে ঢাকায় অবস্থান করায় বাড়িতে না থাকার সুবাদে চোর বারান্দার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢোকে। এসময় সেখানে রাখা আমার পালসার মোটরসাইকেলটি নিয়ে যায় তারা। বেশ কিছুদিন যাবত ফুলছড়িতে চোরের উপদ্রুপ বেড়েছে।

রানু কসমেটিকসের মালিক রানু সরকার বলেন, ‘খুব কষ্ট করে দোকানটি সাজিয়েছিলাম। কিন্তু চোর আমার সর্বনাশ করে গেছে। শুধু আমার না, এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গবাদিপশু, টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ চুরি ঘটনা বেড়ে গেছে। আমরা ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভুক্তভোগী বলেন, কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের পাশে কমিউনিটি ক্লিনিকের পেছনে প্রতিদিন নেশাখোরদের আড্ডা বসে। নেশার টাকা যোগাড় করতে না পেরে তারাই হয়তো এসব চুরির ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েও কাজ হয় না।

ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাওছার আলী বলেন, ‘চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় অধিকাংশ লোক অভিযোগ করেন না। সম্প্রতি কর্তিকুড়া এলাকায় দোকান চুরির সময় স্থানীয়রা দুই চোরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে তাদের কাছ থেকে তালা কাটার মেশিন, প্লাসসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়। এ সংক্রান্ত একটি মামলা হয়েছে। পুলিশি টহল জোরদারসহ গ্রাম পুলিশদের পাহারার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, মাসিক সমন্বয় সভায় চুরিসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে আলোচনার পর পুলিশকে নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিজ নিজ এলাকায় চুরির ঘটনা রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, ০১ জুন, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।