ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ, সজ্জিত হচ্ছে জনসভাস্থল, অপেক্ষায় দক্ষিণাঞ্চলবাসী

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ, সজ্জিত হচ্ছে জনসভাস্থল, অপেক্ষায় দক্ষিণাঞ্চলবাসী

মাদারীপুর: আর মাত্র তিন দিন বাকি। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দ্বার উন্মোচন হবে আগামী শনিবার (২৫ জুন)।

 

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে দক্ষিণাঞ্চলের পদ্মা বিধৌত জনপদ। এখন শুধু সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় পদ্মার এ পাড়ের মানুষ। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক বিপ্লব সৃষ্টি হবে। রাজধানী ঢাকা চলে আসবে হাতের মুঠোয়।  

এরই মধ্যে পদ্মা সেতুর জনসভাস্থলে মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। লাখ লাখ মানুষের জন্য তৈরি করা হচ্ছে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠান উপভোগ করার ব্যবস্থা। পয়ঃনিষ্কাশণের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ৫০০ টয়লেট, থাকছে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা। নদীপথে আসা মানুষের জন্য তৈরি করা হচ্ছে ২০টি পন্টুন। সব মিলিয়ে পদ্মাপাড়ে বইছে উৎসবের আমেজ।

পদ্মার চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষেরা জানান, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখতে আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে চলে এসেছে এরই মধ্যে। এ এলাকার গ্রামের মানুষের মধ্যে বইছে আনন্দ-উদ্দীপনা। ২৫ তারিখের জন্য সবাই অপেক্ষায় রয়েছে। ঘরে ঘরে যেন ঈদের আনন্দ বইছে।

এদিকে শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, জনসভায় অংশ নিতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ নিজ উদ্যোগে নেতাকর্মী, সাধারণ লোকজন নিয়ে জনসভায় অংশ নেবেন। উপজেলার শিরুয়াইল, দত্তপাড়া, নিখলী, বহেরাতলা এলাকার জন্য আড়িয়াল খাঁ নদীতে কমপক্ষে ৫০টি লঞ্চ থাকছে। লঞ্চে করে জনসভায় অংশ নেবেন এ এলাকার লোকজন। এছাড়া জনসভায় যেতে অন্তত ৫০০ বাসসহ অন্যান্য যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি বলেন, আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এখন যেন সময় যেতেই চাচ্ছে না। ২৫ তারিখের জন্য অপেক্ষায় আছি। জনসভার মঞ্চ প্রস্তুতসহ চারপাশে সাজানো হচ্ছে। আলোকসজ্জা করা হচ্ছে। এ এক অন্য রকম আনন্দ!

ষাটোর্ধ্ব মো. আবুল কাশেম নামে পদ্মাপাড়ের এক বাসিন্দা বলেন, পদ্মায় সেতু হতে পারে এমন ভাবনা কল্পনাতেও ছিল না। ঝড়-বৃষ্টি, বর্ষায় ঢাকা যাওয়া ছিল এ এলাকার মানুষের কাছে সবচেয়ে কঠিন এবং কষ্টের। আমাদের এলাকায় তেমন রাস্তাঘাট ছিল না। বৃষ্টিতে কাদাপানি পায়ে মেখে চলতে হবে। একমাত্র পদ্মা সেতু পাল্টে দিয়েছে এ এলাকার চিত্র। আগে আমাদের 'গাও-গেরামের' লোক বলত। এখন এ এলাকায় অসংখ্য লোকজন ঘুরতে আসেন। জমজমাট সব জায়গায়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।

আহসান নামে কাওড়াকান্দি এলাকার এক যুবক বলেন, সেতু উদ্বোধনের অনুষ্ঠান দেখতে বাড়ি চলে এসেছি। সেতু চালুর পর সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা যাব।

মো. ইসমাইল নামে পদ্মাপাড়ের গ্রাম চরজানাজাত এলাকার এক যুবক বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। এক বুক আবেগ পদ্মা সেতু নিয়ে। জনসভা হবে আমাদের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে। পদ্মার পাড়েই। আমাদের এলাকায় উৎসবের আমেজ বইছে।

২৫ জুন, শনিবার। রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ, নতুন সাজে সজ্জিত হচ্ছে জনসভাস্থল। থাকছে ছয়দিনব্যাপী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন। আর এসব ঘিরেই মানুষের মনে বিশেষ করে পদ্মাপাড়ের মানুষের ঘরে বইছে উৎসব আমেজ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।