যশোর: যশোর নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ মানুয়ার নির্দেশেই জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান ধনিকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।
গ্রেফতাররা হলেন- শহরের রেলরোড এলাকার ফরিদ মুন্সির ছেলে রায়হান (২৫), শংকরপুর এলাকার বাবু মীরের ছেলে ইছা মীর (৩০) ও আল-আমীন। এছাড়া আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত গাছি দা, চাইনিজ কুড়াল ও বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়।
আসামিদের প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে জানা গেছে, স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এসপি প্রলয় কুমার বলেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা শামীম আহম্মেদ মানুয়া ও বদিউজ্জামান ধনির মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব ছিল। ওই দ্বন্দ্বের জেরে মানুয়ার মেয়ের জামাই ইয়াসিন হত্যা মামলায় ধনিকে আসামি করা হয়। সেই থেকে শত্রুতা শুরু হলেও পরে এলাকায় দলীয় কোন্দল আর রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদল নেতা ধনিকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এক পর্যায়ে বিএনপি নেতা মানুয়ার নির্দেশে তার ভাগ্নে রায়হান হত্যা করে।
এ ঘটনায় বুধবার (১৩ জুলাই) রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান মণি। মামলায় অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় বাদী নিরাপত্তার কারণে সরাসরি কাউকে আসামি না করলেও ধনিকে হত্যার পর থেকে বিএনপি নেতা মানুয়ার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন তার স্বজনরা। তাদের অভিযোগ ছিল পূর্ববিরোধের কারণে ধনিকে লোক দিয়ে খুন করিয়েছেন শামীম আহমেদ মানুয়া নামে সেই বিএনপি নেতা।
জানাজা শেষে ধনির শ্যালক তপু রহমান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শামীম আহমেদ মানুয়া ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাকে ধরতে পারলেই এ হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দুপুরে যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধনি খুনের পর দিন বুধবার তার জানাজায় যুবদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলা মিল্টন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা অংশ নেন।
জানাজায় বদিউজ্জামান ধনি হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বদিউজ্জামান ধনি একজন নির্ভেজাল রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। তার সঙ্গে কারোর কোনো বিরোধ ছিল না। এভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে তাকে হত্যার বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারছি না। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের পুলিশ শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করবে এটাই প্রত্যাশা করি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২২
ইউজি/আরবি