ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

উন্নয়নের সুফল তৃণমূলে নিতে কাউন্সিলরদের ভূমিকা রাখতে হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২৩
উন্নয়নের সুফল তৃণমূলে নিতে কাউন্সিলরদের ভূমিকা রাখতে হবে বক্তব্য দেন চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম: উন্নয়নের সুফল তৃণমূলে নিতে উন্নয়ন কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের তদারকি করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।  

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে চসিকের নির্বাচিত ৬ষ্ঠ পরিষদের ৩৪তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

মেয়র রেজাউল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের যোগাযোগ অবকাঠামোকে ঢেলে সাজাচ্ছেন। জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার কোটি টাকা।

তবে, এ প্রকল্পগুলোর সুফল তৃণমূলের জনগণের কাছে নিয়ে যেতে স্থানীয় পর্যায়ে কাউন্সিলরদের তদারকি করতে হবে। কোনো প্রকল্পের কাজ যাতে নিম্নমানের না হয় সে বিষয়ে কাউন্সিলরদের নজর রাখতে হবে। ওয়ার্ডে হেলথ কমপ্লেক্সেগুলোতে সেবা পাওয়া যাচ্ছে কিনা তা দেখতে হবে। চসিক জেনারেল হাসপাতালকে ডেডিকেটেড শিশু হাসপাতাল করা যায় কিনা সে বিষয়টি আমার বিবেচনায় আছে। যেহেতু পাশেই একটি মাতৃসদন হাসপাতাল আছে, একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল চট্টগ্রামবাসীর জন্য অনেক সুফল বয়ে আনবে।

প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ গড়া হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ করতে চাই। হালিশহর, চান্দগাঁওসহ বেশ কিছু এলাকায় ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকা খাস জমি চিহ্নিত করে সেগুলোতে শিশুদের খেলার ব্যবস্থা করা হবে। কাউন্সিলররা এ বিষয়ে উদাসীন হলে চলবে না। কারণ, এ মাঠগুলো হলে অভিভাবকরা স্বস্তি পাবেন।  

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিভিত্তিক আধুনিকায়ন প্রয়োজন মন্তব্য করে মেয়র বলেন, বর্তমানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা অনেকটাই শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। আমি সম্প্রতি ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, সুইডেনে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম দেখেছি। আমার মনে হয় যেভাবে দ্রুত জনগণ বাড়ছে আমাদের শুধু শ্রমের ওপর নির্ভর না করে প্রযুক্তির ওপরও জোর দিতে হবে। আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ধীরে ধীরে ভূগর্ভস্থ এসটিএস, নতুন ল্যান্ডফিল তৈরি, সংগৃহীত বর্জ্যের পরিবেশসম্মত ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়াতে হবে চসিককে। শুষ্ক মৌসুমেই আমরা নালা থেকে মাটি তোলা শুরু করেছি। বর্ষার আগেই নালার মাটি অপসারণ করা গেলে পরবর্তী বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা কমবে পাশাপাশি জলপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকলে মশাও কমবে। মশক নিধন কার্যক্রম ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা কাউন্সিলরদের তদারকি করতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সড়কের নামকরণ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, মুক্তিযোদ্ধা অমল মিত্রের নামে সড়কের নামকরণের একটি প্রস্তাব এসেছে, একে আমি সাধুবাদ জানাই। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে আগামী প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন রেখে যাওয়া। আমার পর কোনো মুক্তিযোদ্ধার চট্টগ্রামের মেয়র হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাই,  বিভিন্ন ওয়ার্ডে যে লেন-বাইলেন আছে সেগুলোর নাম চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখা মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের নামে নামকরণ করে সেগুলোতে সংক্ষিপ্ত জীবনীসহ পাথরের ফলক স্থাপন করব।  

সভায় একাধিক কাউন্সিলর ট্রাফিক বিভাগকে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করা এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণের আহবান জানালে ট্রাফিক বিভাগের এডিসি মো. কাজী হুমায়ুন রশীদ বলেন, হকারদের উঠিয়ে দিলে তারা আবারও বসে যায়। এজন্য হলিডে মার্কেট চালু করা প্রয়োজন। কাউন্সিলররা সংশ্লিষ্ট থানার ওসির সঙ্গে সমন্বিত পদক্ষেপ নিলে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করা এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশেষ করে রিকশাগুলোর চার্জিং পয়েন্টগুলো যদি অভিযান চালিয়ে বন্ধ করা যায় তাহলে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণে আসবে। অনেক বাসার সামনে ফুটপাথে র‌্যাম্প তৈরি করা হচ্ছে, এগুলোর কারণে অনেকে দুর্ঘটনায় পড়ছে তাই এগুলো সরাতে অভিযান প্রয়োজন। পাশাপাশি বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে পার্কিং স্পেস আছে কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।  

বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে সড়ক দখল করা হকারদের উচ্ছেদ করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ফয়’স লেক এলাকাসহ পর্যটন ও বিনোদন এলাকাগুলোতে হকারদের উচ্ছেদ করা হবে। হলিডে মার্কেট চালু করে হকারদের শৃঙ্খলায় আনা হবে। সিডিএ ও চসিক একসঙ্গে কাজ করলে পার্কিং ও নালা সংক্রান্ত বিদ্যমান বিশৃঙ্খলা নিরসন হবে। চসিক ও সিডিএকে একত্রে শহরের রাস্তাগুলো প্রশস্ত করার ব্যাপারে কাজ করতে হবে।  

সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, দরপত্র কমিটির কার্যবিবরণী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিরা নিজ নিজ কমিটির কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন। সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধান এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২৩
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।