ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১৮ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

বাকৃবির হল সিলগালা, শিক্ষার্থীরা গেছেন কিনা তল্লাশি করছে পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৪
বাকৃবির হল সিলগালা, শিক্ষার্থীরা গেছেন কিনা তল্লাশি করছে পুলিশ

ময়মনসিংহ: অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক হল ত্যাগের নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) প্রশাসন। অথচ এ নির্দেশনা বাতিলের দাবিতে বুধবার পাঁচ ঘণ্টা আন্দোলন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।

এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শিক্ষার্থীদের হলে থাকার আশ্বাসও দিয়েছিলেন।

পরে বুধবার গভীর রাত থেকে হল ছাড়া শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) ভোর ৪টার দিকেও শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যেতে দেখা যায়। তারা আদৌ যাচ্ছেন কিনা, সেটি তল্লাশি করছে পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে হল না ছাড়লে পুলিশ ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের বের করা হবে। এদিকে সারা দেশে শাটডাউন কর্মসূচি চলছে। এটি শুরু হওয়ার আগেই হল থেকে চলে যাচ্ছি আমরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার জন্য বলা হচ্ছে। পরে প্রতিটি হলে পুলিশ গিয়ে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার কথা বলে। ফলে  বাধ্য হয়ে হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা। এরপরে হলের প্রতিটি কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হয়।

প্রক্টরের আশ্বাসের পরেও হল ছাড়ার বিষয়ে এক শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল রাতে প্রক্টরের দেওয়া আশ্বাস নিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলাম। আজ আবার শুনলাম যে হল বাধ্যতামূলক ছাড়তে হবে। আমার বাড়ি চট্টগ্রাম। এখন আমি ট্রেন কিংবা বাস কিছুই পাবো না। পাশাপাশি চলছে শাটডাউন। আমি এখন নিরুপায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, জাতীয় পর্যায়ে এই মুহূর্তে সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। আজ ১২টার পর অফিসিয়ালি বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ হয়েছে। জেলা প্রশাসন দুপুর ১২টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে কিছু পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আছে কি না সেটি দেখতে এসেছে। যারা ক্যাম্পাসে ছিল পুলিশ তাদেরকে চলে যেতে বলেছে। শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে। তারা কোনো ধরণের বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, এই পরিস্থিতিতে আপাতত কাউকেই হলে থাকার অনুমতি দেওয়া যাবে না। সবাইকে হল ত্যাগ করতে হবে। তবে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হল খুলে দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা। কিন্তু এখন সবাইকে যেতে হবে। পরিস্থিতি যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, ১৭ জুলা বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. অলিউল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে হল বন্ধের তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সাথে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ১৮ জুলাই দুপুর ১২টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৪
এমজে

 
 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।