ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মইনুল হোসেন স্মরণে আপিল বিভাগে আধাবেলা বিচারকাজ বন্ধ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
মইনুল হোসেন স্মরণে আপিল বিভাগে আধাবেলা বিচারকাজ বন্ধ

ঢাকা: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোববার (১০ ডিসেম্বর) দ্বিতীয়ার্ধে (বেলা ১১টার পর থেকে সোয়া দুপুর ১টা পর্যন্ত) আপিল বিভাগের বিচারকাজ বন্ধ থাকবে।

এদিন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

 

সকালে আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক নির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন মারা গেছেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তার অনেক অবদান রয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত এর আগেও বারের সাবেক সভাপতিদের মৃত্যুতে সম্মান দেখিয়েছে।  

এরপর প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করে আপিল বিভাগে বেলা ১১টার পর বিচারকাজ বন্ধ থাকবে বলে জানান।

গত শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ।

তিনি জানান, গুলশানে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। রোববার বাদ জোহরের পর সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

এদিকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

নির্ভীক সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ১৯৪০ সালের জানুয়ারি মাসে পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্কুলের শিক্ষা লাভ করেন কলকাতা, পিরোজপুর ও ঢাকায়। ঢাকার নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি নিতে ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডন যান এবং মিডল টেম্পল-ইন এ ভর্তি হন। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ব্যারিস্টার হিসেবে বার এ যোগ দেন এবং একই বছরের ডিসেম্বরে ঢাকা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন।  

লন্ডন অবস্থানকালে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের লন্ডনস্থ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময় তিনি কমনওয়েলথ প্রেস ইনস্টিটিউটেরও একজন সদস্য ছিলেন।

১৯৬৯ সালে বাবার মৃত্যুর পর ইত্তেফাক সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ইত্তেফাকের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হন।

১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পিরোজপুর (বরিশাল) জেলার ভান্ডারিয়া-কাঠালিয়া নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি নিউ নেশন পত্রিকার প্রকাশক ছিলেন।  

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি ও প্রেস কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশে প্রথম গঠিত প্রেস কমিশনেও তিনি সদস্য ছিলেন। তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত (২০০০-২০০১) ছিলেন।  

ওয়ান-ইলেভেনের পর তিনি এক বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।