ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নজরুলকে হাজিরের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২২
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নজরুলকে হাজিরের নির্দেশ ফাইল ছবি

ঢাকা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নজরুল ইসলামকে ৭ জুন হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

পলাতক থাকা অবস্থায় র‌্যাবের হাতে নজরুল গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি জানানোর পর রোববার (৫ জুন) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো.শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

আদালতে প্রসিকিউটর ছিলেন সৈয়দ হায়দার আলী ও সুলতান মাহমুদ সীমন।  

গত ৩১ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নওগাঁর তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারা হলেন- নওগাঁর মো. রেজাউল করিম মন্টু, মো. নজরুল ইসলাম, মো. শহিদ মণ্ডল। এর মধ্যে নজরুল ইসলাম পলাতক ছিলেন।

গত শুক্রবার (৩ জুন) সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা এক অভিযানে পলাতক আসামি নজরুল ইসলামকে আটক করে। পরে তাকে হাজির করার পর সিএমএম আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তাদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।  

এ মামলায় আসামি ছিলেন চারজন। তারা হলেন- নওগাঁর মো. রেজাউল করিম মন্টু, মো. নজরুল ইসলাম, মো. শহিদ মণ্ডল ও মো. ইসহাক। তবে এর মধ্যে তদন্ত চলার সময়ই গ্রেফতার অবস্থায় মো. ইসহাকের (৬২) মৃত্যু হয়। এ কারণে অভিযোগ থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়। বাকি তিন জনের মধ্যে মন্টু ও মণ্ডল কারাবন্দি রয়েছেন। বাকি আসামি নজরুল ইসলাম পলাতক ছিলেন।  

তদন্ত সংস্থা জানায়, আসামি মো. রেজাউল করিম মন্টু ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলার আমির ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ওই সময় থেকেই তিনি জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজ বাড়িতে চলে আসেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে তিনি আত্মগোপন করেন। বাকিরাও জামায়াতের সমর্থক বলে জানানো হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আসামিরা নওগাঁর (সাবেক রাজশাহী জেলার নওগাঁ মহকুমা) বদলগাছী থানায় অপরাধ সংঘটন করে। আসামিদের বিরুদ্ধে সাতজনকে হত্যাসহ অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করার অভিযোগ আনা হয়।

এ মামলায় মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের রানাহার গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র সাহেব আলী, আকাম উদ্দিন, আজিম উদ্দিন মণ্ডল, মোজাফফর হোসেনকে হত্যাসহ ওই সময় ১০-১২টি বাড়ি লুট করে অগ্নিসংযোগ করে।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র মো. নুরুল ইসলামকে হত্যা করে। এ সময় তারা ১৫-২০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৫টা থেকে পরদিন অর্থাৎ ৯ অক্টোবর আনুমানিক বিকেল ৫টা পর্যন্ত নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের মো. কেনার উদ্দিন ও মো. আক্কাস আলীকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করে। পরে অপহরণ করে জয়পুরহাটের কুঠিবাড়ি ব্রিজে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। এ সময়ের মধ্যে আসামিরা ৪০-৫০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে।  


বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২২
ইএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।