ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

লক্ষ্মীপুরে হত্যা মামলায় ৭ জনের যাবজ্জীবন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২
লক্ষ্মীপুরে হত্যা মামলায় ৭ জনের যাবজ্জীবন 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আহছান উল্লাহ (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় সাতজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকাল ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত সাত আসামিকেই যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মুরাদ (৩৯), জাকির হোসেন (২৮), রিপন (৩৫), নিশান (৩১), সুমন (৩৭),  কামাল (৩২) ও আলমগীর হোসেন (৪৬)। এদের মধ্যে আসামি সুমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন। দণ্ডিতরা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের নন্দীগ্রামের বাসিন্দা।

ভিকটিম আহছান উল্লাহ একই গ্রামের আব্দুর রহমান কবিরাজ বাড়ির বাসিন্দা। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৬ জুলাই ভোরে তিনি খুন হন।  মামলার বাদী নিহত আহছান উল্লাহর ছেলে মো. আলম (৩১)। তিনি ২০১৪ সালের ২৬ জুলাই লক্ষ্মীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়। ওইদিন ভোরে অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীরা তার বাবাকে কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করেন।  

এজাহার সূত্র জানায়, আহছান উল্লাহ সদর উপজেলার বশিকপুরের পোদ্দারবাজারে কাঁঠালের ব্যবসা করতেন। রাত পৌনে ৩টার দিকে বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথিমধ্যে যোগী বাড়ির সামনের রাস্তার ওপর হত্যাকারীরা তার গতিরোধ করে তাকে কুপিয়ে এবং গুলি করে পালিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পোদ্দারবাজারের ভাই ভাই হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনার পর এ হত্যা মামলাটি তদন্ত করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবুল বাসার। ঘটনাস্থলে হত্যাকারীদের ফেলে যাওয়া একটি মোবাইল ফোনের সূত্র এবং গোপন তদন্তের ভিত্তিতে তিনি এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেন। তিনি ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কামালকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে এ ঘটনায় আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতার করলে তিনিও ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে অন্য আসামিদের নামও বের হয়ে আসে।

মামলার এক বছরের মাথায় ২০১৫ সালের ২৬ জুন দণ্ডপ্রাপ্ত ওই সাতজনকে অভিযুক্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবদন দাখিল করে গোয়েন্দা পুলিশ।   তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত আসামি আলমগীর হোসেনের সঙ্গে নিহত আহছান উল্লাহর সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।

আদালত ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। দীর্ঘ ৮ বছর পর আদালত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আজ এ হত্যা মামলার রায় দেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।