ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

টেকনাফের ইউএনওর বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপ হাইকোর্টকে জানালো রাষ্ট্রপক্ষ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২২
টেকনাফের ইউএনওর বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপ হাইকোর্টকে জানালো রাষ্ট্রপক্ষ

ঢাকা: কক্সবাজারের টেকনাফে উপহারের ঘর নির্মাণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে এক সাংবাদিকের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরুর আপত্তিকর ভাষা ব্যবহারের বিষয়ে প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপ হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

সোমবার (২৫ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন রোববার নজরে আনার পর বিস্তারিত খোঁজ-খবর জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে আদালতকে অবহিত করলো রাষ্ট্রপক্ষ।

পরে এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিককের জানান, জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, ওই ইউএনওকে শোকজ করেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বিষয়ে তদন্ত করে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। এ বিষয়গুলো হাইকোর্টে জানিয়েছি। প্রশাসনের এসব পদক্ষেপে আদালত সন্তুষ্ট।

রোববার আদালতে এ বিষয়ে দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদন নজরে আনেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ২২ জুলাই দৈনিক প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নে নিচু জমিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় কক্সবাজারের এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়ার পর এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু।

শুক্রবার বিকেলে শহরের হিলডাউন সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে উভয় পক্ষকে নিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

উভয় পক্ষ ঘটনার মীমাংসা করলেও ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার মুখ থেকে এ ধরনের কটুবাক্য আশা করা যায় না। ’

ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম সাইদুল ফরহাদ। তিনি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘ঢাকা পোস্ট’-এর কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি।

সাইদুল ফরহাদ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার তার অফিশিয়াল মুঠোফোন নম্বর থেকে কল করেন সাংবাদিক সাইদুল ফরহাদকে। এ সময় সংবাদ প্রকাশের কারণ জানতে চেয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। রেকর্ড করা ওই অডিও কলটি সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ওই অডিও কলে ইউএনওকে বলতে শোনা যায়, ‘তুই কত বড় সাংবাদিক হইছছ? তুই তো টেকনাফের প্রতিনিধি না। ’ এ সময় সাইদুল ফরহাদ নিজেকে জেলা প্রতিনিধি পরিচয় দিলে ইউএনও তাকে বলেন, ‘কিসের জেলা প্রতিনিধি। ‍ সেদিন তোর বাবা যিনি আসছিল, যে তোর পরিচয় দিছিল সেইজন্য তোর ফোন আমি ধরেছিলাম। তুই যা লিখছছ পুরোটাই মিথ্যা। ’

এ সময় সাংবাদিক ফরহাদ ইউএনওকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি এভাবে কথা বলছেন কেন?’ তখন ইউএনও বলেন, ‘তোর সাথে যে আমি কথা বলতেছিলাম তখনো তো আমি ওই স্পটে ছিলাম ব্যাটা। তুই যে নিউজটা করছছ সেটা মিথ্যা,...। তুই বলছছ যে, ঘর পানিতে ভাসছে। তুই যখন আমাকে ফোন দিয়েছিস, তখনো আমি স্পটে ছিলাম। আমার সিনিয়র স্যার ছিল স্পটে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২২
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।