কিশোরগঞ্জ: এক বছরের জন্য অনুমোদন পেয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিন বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে তিন সদস্যবিশিষ্ট কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কগমিটি। আর এই দীর্ঘ সময়ের পরেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি।
সম্মেলন ও কাউন্সিল (ভোট) ছাড়াই প্রেস রিলিজের মাধ্যমে ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি এই তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
কমিটিতে আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনকে সভাপতি, মোহাম্মদ ফয়েজ ওমান খানকে সাধারণ সম্পাদক ও লুৎফর রহমান নয়নকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়।
সেই সময়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। সেই সঙ্গে আগামী ১ (এক) বছরের জন্য নতুন কমিটি অনুমোদন দেওয়া হলো।
এর আগেও, সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ শফিকুল গণি ঢালী লিমন সভাপতি ও মো. আশরাফ আলীকে সাধারণ সম্পাদক এবং আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৩ সদস্যের জেলা কমিটি অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সেই কমিটি দায়িত্ব পালন করেছিল প্রায় সাড়ে ৫ বছর।
কমিটি গঠনের পর থেকে সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ ওমান খান এক মেরুতে থেকে তাদের দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।
অন্যদিকে সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান নয়ন আলাদা বলয়ে থেকে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।
সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ ওমান সম্প্রতি সম্মেলন ও কাউন্সিল (ভোট) ছাড়াই প্রেস রিলিজের মাধ্যমে পাকুন্দিয়া ও হোসেনপুর উপজেলার ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেন। এরপর থেকেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, দুই উপজেলায় বয়স্ক, চাকরিজীবি, বিবাহিতদের পদ দিয়ে ছাত্রলীগের নেতা বানানো হয়েছে।
এবারের ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কিশোরগঞ্জ জেলাতে আলাদাভাবে উদযাপন করা হয়েছে। বুধবার (০৪ জানুয়ারি) জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ ওমান খানের নেতৃত্বে দিনটি উদযাপন করা হয়।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার (০৫ জানুয়ারি) জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান নয়নের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান নয়ন বাংলানিউজকে বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করেও কোনো কাজ হয়নি। বিশেষ মহলের তদবিরে তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ফোন রিসিভ না করায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ ওমান খান বাংলানিউজকে বলেন, এবার কিছুদিন পরই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবো। কমিটি পাওয়ার পর কেউ চাকরি পাইলে কি না করা যায়!
এখন কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি করেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৩
এফআর