ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পলাশবাড়ীর পবনাপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মেম্বারদের অনাস্থা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
পলাশবাড়ীর পবনাপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মেম্বারদের অনাস্থা

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান মণ্ডলের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন ইউপির নয় সদস্য (মেম্বার)।

একই সঙ্গে তারা চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন।

 

এদিকে অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ফয়েজ উদ্দীন
বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ১০ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযোগের তদন্ত হবে। তদন্তের পর নীতিমালা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউপির মোট ১২ মেম্বারের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষরকারী নয়জন হলেন- ২  নম্বর ওয়ার্ড সদস্য গোলাম রসুল উজ্জ্বল, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়াউর রহমান জিয়া, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ আলম সরকার, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মালেক প্রধান বাবু, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কেএম জিয়াউর রহমান জিন্নাহ, ৭  নম্বর ওয়ার্ডের সোহেল শেখ, ১, ২ ও ৩  নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার মেরীনা বেগম, ৪, ৫ ও ৬  নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার নাছিমা বেগম এবং ৭, ৮ ও ৯  নম্বর ওয়ার্ডের শাহীনুর বেগম।  

ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচত হন মাহাবুবুর রহমান মণ্ডল। শুরু থেকেই নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে সরকারি পরিপত্র উপেক্ষা করে তিনি মনগড়া ভূমিকা পালন করে আসছেন। কোনো সিদ্ধান্তেই ইউপি সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করেন না তিনি।

তিনি গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ছাড়াও পরিষদের আদায়কৃত টাকা ব্যাংকে জমা না রেখে নিজের পকেটস্থ করেছেন। এছাড়া জন্ম নিবন্ধনে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি টাকা আদায় করেন। জনসাধারণের কাছে গ্রাম আদালতের বিপরীতে ১০/২০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান সেখানে ৪০০ টাকা পর্যন্ত ফি নিচ্ছেন। টিসিবি সুবিধাভোগীদের কার্ডের পণ্যসামগ্রী তিনি নিজেই উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছেন।
ভিজিএফের ৮৪ বস্তা চাল কার্ডধারীদের না দিয়ে কালোবাজারির মাধ্যমে বিক্রি করেছেন। পরে পুলিশ চালের বস্তাগুলো জব্দ করে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ভিডব্লিউবি কর্মসূচির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার অন্তর্ভুক্তির তালিকা অনিয়ম করে অর্থের বিনিময় দরিদ্রদের বাদ দিয়ে আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে এসব কার্ড বিতরণ করেন। ২০২১-২২ অর্থবছর এলজিএসপির বরাদ্দ করা অর্থ ভুয়া প্রকল্প দাখিলের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন।

তবে ফোনে চেয়ারম্যনে মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। শুরু থেকেই বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগ করে দিতে রাজি না হওয়ায় কয়েকজন মেম্বার আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এসব মিথ্যা অভিযোগ তুলে অনাস্থা জানিয়েছেন তারা।

সর্বশেষ ভিজিডির বরাদ্দের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে এ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ পাওয়া যায় ২৫৫টি। এর মধ্যে ইউনিয়নের ১২ মেম্বারের প্রত্যেককে সাত/আটটি করে বরাদ্দ দিতে চাইলে তারা ১০/১২টি করে ভিজিডি কার্ড দাবি করেন। না পেয়ে তারা অভিযোগ করেছেন।

অনাস্থার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, পরিষদের প্রতিটি কাজ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে চালিয়ে আসছেন। সেক্ষেত্রে অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত কামনা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।