কক্সবাজার থেকে: চট্টগ্রাম বন্দর ও তৎকালীন বার্মার মধ্য রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সরকার। যেটি যাওয়ার কথা ছিল কক্সবাজার দিয়ে।
তারপর ১৯১৭ থেকে ১৯২১ সালে চট্টগ্রাম-দোহাজারী পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হওয়ার পরে ব্রিটিশদের এ উদ্যোগ থমকে যায়।
অবশেষে আগামীকাল শনিবার (১১ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধন করবেন। কক্সবাজার পর্যন্ত এ রেলপথ উদ্বোধনের মাধ্যমে এক ধাপ এগিয়ে গেল।
এরপরের চ্যালেঞ্জ মিয়ানমারের আপত্তি নিষ্পত্তি করে ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণের মাধ্যমে চীনসহ দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে রেলপথ চালু।
এরফলে বিনিয়োগ-শিল্পায়ন ও বাণিজ্যিক বন্ধন সহজতর হয়ে উঠবে। কৃষি-খামার ও শিল্পকারখানায় উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর বাজারজাত এবং রফতানি সুবিধার প্রসার ঘটবে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের জনসাধারণের কর্মচাঞ্চল্য ও সচ্ছলতা বৃদ্ধি পাবে।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, এটার মূল প্রকল্প রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত। এটা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে যুক্ত হবে। মিয়ানমারের দিক থেকে রেলের যে অবকাঠামো সেখানে তারা পিছিয়ে আছে। যে কারণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কক্সবাজার পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ট্রান্স এশিয়ান যে রেল চলাচলের কথা বলা হচ্ছে সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, মিয়ানমারের দিক থেকে চীনের সঙ্গে, কুমবিংয়ের সঙ্গে যে রেলপথ সেটি মিয়ানমার বা চীন সরকারের সহায়তায় যতদিন বাস্তবায়ন না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ স্থাপনে জন্য ২০১০ সালে প্রথম প্রকল্প নেওয়া হয়। শুরুতে এটি ছিল ‘দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে মোট ১২৯ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণের কথা ছিল।
পরে রামু থেকে ঘুমধুম অংশের কাজ স্থগিত করা হয়। এখন চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ সমাপ্ত হল।
মোট ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার এ প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। বাকি ৪ হাজার ১১৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২, নভেম্বর ১০, ২০২৩
এনবি/এসএএইচ