ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বৃষ্টির অভাবে ব্যাহত আমন চাষ, পাট নিয়ে বিপাকে কৃষক

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৪
বৃষ্টির অভাবে ব্যাহত আমন চাষ, পাট নিয়ে বিপাকে কৃষক

নীলফামারী: আষাঢ় মাসে সামান্য বৃষ্টির পর শ্রাবণ মাসে তেমন বৃষ্টির দেখা নেই। তবে মাঝেমধ্যে রোদ আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।

এই বৃষ্টি কৃষকের কোনও কাজে আসছে না। বৃষ্টির অভাবে কৃষকেরা আমনের চারা লাগাতে পারছেন না। সেইসঙ্গে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না নীলফামারীর চাষিরা। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা।

সরেজমিন দেখা যায়, পানির অভাবে পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। জমির পাশে পড়ে থেকে শুকিয়ে যাচ্ছে পাটগাছ। এছাড়া আমন চারা রোপণের ভরা মৌসুমে পানি অভাবে চারা রোপণ কাজ করতে পারছেন না চাষিরা। অনেকেই সেচ পাম্প ব্যবহার করে জমিতে সেচ দিচ্ছেন। তৈরি করছেন আমনের জমিও। এজন্য প্রতি ঘণ্টা সেচের জন্য কৃষককে ২৫০ টাকা গুণতে হচ্ছে। গভীর নলকূপের সেচের জন্য প্রতিবিঘা (৬০ শতাংশ) ৫০০ টাকা সেচের ভাড়া দিতে হচ্ছে। এতে করে কৃষকের ব্যয় বাড়ছে।

কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি আমন মৌসুমে জেলার ৬টি উপজেলায় এক লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৯২ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে উৎপাদন অর্জিত হবে তিন লাখ ৭৯ হাজার ৮১ মেট্রিক টন। কৃষকেরা সেচের মাধ্যমে আমনের আবাদ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন।

কাদের, শফিকুল ও নজরুল নামে কয়েকজন কৃষি শ্রমিক জানান, প্রতিবিঘা জমিতে আমনের চারা তুলে লাগানোর জন্য ২৫০০ টাকা ৩০০০ টাকা নিচ্ছি জমির মালিকের কাছ থেকে। পানির অভাবে কৃষকেরা জমি তৈরি করতে পারছেন না। ফলে জমিতে চারা লাগানো যাচ্ছে না। কৃষকের পাট কেটে রেখেছি পানির অভাবে জাগ দিতে পারছি না।

জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের দলুয়ার কৃষক আমিনুল হাসান জানান, ১০ বিঘা জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তিন বিঘা জমি বৃষ্টির পানিতে লাগিয়েছি আগেই। বর্তমানে বৃষ্টির অপেক্ষায় আছি। বৃষ্টির অভাবে আমনের জমি তৈরিও করতে পারছি না। এমনকি আমনের চারাও লাগানো যাচ্ছে না। বর্ষায় শ্যালো মেশিন চালিয়ে আমনের আবাদ করতে হচ্ছে এর চেয়ে আশ্চর্যের আর কী আছে?।  

জেলার কিশোরগঞ্জের কৃষক শামীম হোসেন বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে আমন চাষের আবাদ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে জমিতে সম্পূরক সেচের মাধ্যমে আমন ধানের চারা রোপণ করতে হচ্ছে। এতে ফলন খরচ বেড়ে যাবে। তিনি আর বলেন, এ বছর বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। তাই আমন ধান আবাদে অনেকটা সেচনির্ভর হতে হচ্ছে। শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে সেচ এবং ট্রাক্টর দিয়ে চাষাবাদ করতে গিয়ে আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।  

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নীলফামারীর উপ-পরিচালক (ডিডি) ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান, জেলায় পাটের ফলন ভালো হলেও পানির অভাবে তা জাগ দিতে পারছেন না কৃষকরা। সেচ পাম্প ব্যবহার করে পাট জাগ দিতে তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে পানির অভাবে আমন ধানের আবাদে কৃষকরা বেগ পাচ্ছেন। সেচযন্ত্র দিয়ে সেচ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এখনও রোপণের সময় আছে, আশাকরি আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।