কুমিল্লা: 'তবুও থামে না যৌবন বেগ জীবনের উল্লাসে'- জীবন বন্দনা কবিতায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম হার না মেনে নতুন নতুন উদ্ভাবনের নেশায় ছুটে চলা মানুষদের উদ্দেশ্যে এ উক্তিটি করেন।
ঠিক তেমনই একজন মানুষ আলী আক্কাস ভূঁইয়া।
আলী আক্কাস ভূঁইয়া ১৯৫৬ সালে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের লক্ষ্মীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭২ সালে এসএসসি, ১৯৭৫ সালে এইচএসসি, ১৯৮৮ সালে স্নাতক ও ২০০১ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। মাঝে বিএড ও এমএড সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৮৬ সাল থেকে নাঙ্গলকোটের বক্সগঞ্জের ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সেখান থেকে অবসরে যান ২০১৭ সালে। ২০১২ সালে কুমিল্লা আইন কলেজে ভর্তি হন। এলএলবি পাস করেন ২০১৬ সালে। ২০২০ সালে আইনজীবী সনদ পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেন তিনি। সে বার প্রিলিতে ফেল করেন। ২০২২ সালে পুনরায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন।
সম্প্রতি আলী আক্কাস ভূঁইয়ার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টেবিলের ওপর থরে থরে সাজানো হয়েছে আইনের বই। গভীর মনযোগ দিয়ে বই পড়ছেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত আলী আক্কাসের ঘরে বন্ধু ও স্বজনদের আনাগোনা আছে। তবে কেউই তার কাজে নিরুৎসাহিত করেন না।
আলী আক্কাস ভূঁইয়া বলেন, মায়ের ইচ্ছা ছিল আইনজীবী হই। তাই শৈশব থেকে স্বপ্ন ছিল আইনজীবী হওয়ার। কিন্তু সময় বাস্তবতার কারণে পারিনি। মাঝে মা মারা যান। বন্ধু সাংবাদিক মীর কাশেম অনুপ্রেরণা দেন যাতে পড়াশোনা বন্ধ না করি। তার ও কাছের আরও কিছু মানুষের অনুপ্রেরণায় পড়াশোনা চালিয়ে যাই। আমি বিশ্বাস করি, সনদ আমি পাবো। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আইন পেশায় থাকতে চাই।
তিনি আরও বলেন, চাপ থাকলেও কখনও ক্লাস মিস করতাম না। এ কারণে কলেজের শিক্ষকরা আমাকে খুব পছন্দ করতেন, অনুপ্রেরণা দিতেন।
আলী আক্কাস ভূঁইয়ার বন্ধু সাংবাদিক মীর কাশেম বলেন, এরাই সত্যিকারের মানুষ। এ বয়সের অনেক মানুষ প্রয়াত হয়েছেন। রোগ, অসুস্থতা নিয়ে টেকা দায়। অথচ এসবের কোনো কিছুকে পাত্তা না দিয়ে লক্ষ্যে ছুটছেন আক্কাস। এটা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২২
আরএ