ঢাকা, শুক্রবার, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দাম শুনেই লিচু না কিনে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে!

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৭ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২৩
দাম শুনেই লিচু না কিনে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে!

মাদারীপুর: মাদারীপুরের বাজারগুলোতে মৌসুমি ফল লিচুর আমদানি বেড়েছে। ফলের বাজার থেকে শুরু করে হাট-বাজার, এমনকি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ঝুড়িতে করে বেশ অনেক যায়গাতেই বিক্রি করা হচ্ছে ফলটি।

কিন্তু বাজারে প্রচুর পরিমাণে লিচুর সরবরাহ থাকলেও দাম এখনও অনেকটাই বেশি। অনেকেই শুধু দাম শুনে লিচু না কিনে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

দাম বেশি হওয়ায় এবারে লিচু ক্রেতাদের সংখ্যা তুলনামূলক কম। বিক্রিও আশানুরূপ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। একদিন বিক্রি বাড়লে, আরেকদিন খুবই কম বিক্রি হয়। এভাবেই চলছে লিচুর বাজার। দাম বেশি থাকায় ক্রেতারাও পরিমাণে কম কিনছেন বলে জানা গেছে।

ক্রেতারা জানান, লিচু এখন শৌখিন ফলে পরিণত হয়েছে। ১০০টি লিচু ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এতো দাম দিয়ে এই লিচু একবারের জায়গায় দুইবার আর কেনা হয় না।

জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লিচুর দোকানে বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক। ৫০ ও ১০০টি লিচুর একেকটি আঁটি করা আছে। ১০০টি লিচু (প্রকার ভেদে) ২৫০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একটু বড় সাইজের লিচু ৩২০ টাকা প্রতি ১০০টি এবং অন্যান্যগুলো ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। জেলার বাজারগুলোতে বর্তমানে ঈশ্বরদী ও যশোর এলাকার লিচু বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এরপর দিনাজপুরের লিচু আসবে। সেগুলোর দাম আরও বেশি হবে বলে জানান বিক্রেতারা।

বিক্রেতারা জানান, স্থানভেদে বিক্রি কম-বেশি হয়ে থাকে। তবে বিক্রির পরিমাণ খুব যে বেশি তা নয়। কোনো কোনো দিন বিক্রি খুবই কম হয়। সেক্ষেত্রে লোকসান দিয়েও লিচু বিক্রি করতে হয়। ২৫০ টাকার মধ্যে লিচু বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। ৩০০ বেশি দামের লিচু ক্রেতারা কিনতে চান না। তাছাড়া ৫০ পিচের আঁটি বেশি বিক্রি হয়।

জেলার শিবচর উপজেলার পাঁচ্চরের লিচু বিক্রেতা মো. জহির বলেন, সপ্তাহের তিন-চার দিন ভালো বিক্রি হয়। তখন দৈনিক ১০ থেকে ১২ হাজার লিচু বিক্রি হয়। আবার অন্যান্য দিন ৪-৫ হাজার বিক্রি করতেই কষ্ট হয়ে যায়। এ বছর লিচুর দাম একটু বেশি। তারপরে আবার গতবারের তুলনায় এ বছর বিক্রির পরিমাণ কম। এবারে লিচু কম বিক্রি হচ্ছে। শুধু দরদাম করেই অনেকে চলে যাচ্ছেন।

লিচু কিনতে আসা মো. লিয়াকত নামের এক ব্যক্তি বলেন, একটু ভালো মানের ১০০টি লিচু ৩০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর একটু ছোট সাইজেরগুলো ২৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। দাম আরেকটু কম হলে মাঝে মধ্যে কেনা যেতো। এতো দাম দিয়ে লিচু কেনা হয়ে উঠে না।

আরেক ক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, ৫০টি লিচু কিনেছি ১৫০ টাকা দিয়ে। এর বেশি কিনতে গেলে বাজেট পার হয়ে যায়। লিচুর দাম বেশি। এ জন্য লিচু খুব একটা কেনা হয় না।

এদিকে লিচুর পাশাপাশি বাজারে আম উঠতে শুরু করেছে। জাত ভেদে আম বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি পর্যন্ত। আম বিক্রির পরিমাণ বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। আগামি সপ্তাহের মধ্যে আরও ভালো আম বাজারে চলে আসবে বলেও জানান তারা।

বছরের এই সময়ে নানা জাতের রসালো ফলের সমাহার থাকে বাজারে। দেশীয় ফলের মধ্যে আম, কাঁঠাল আর লিচুর মৌসুম এখন। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী এ ফলের মধ্যে লিচুর দাম অনেকটাই বেশি নিম্ন মধ্যবিত্তের কাছে। এরপরও পরিবার-পরিজনের জন্য সামর্থ অনুযায়ী মৌসুমি এ ফলটি কিনছেন অনেকে। তবে এর তুলনায় আম-কাঁঠালের দাম কম হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় বলে বাজারগুলো এসব ফলে ভরে গেছে। সেগুলোর দাম কিছুটা কম হওয়ায় এসব ফলের ক্রেতারাই বেশি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।