ঢাকা: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট জাতি গড়ে তোলা দরকার। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক স্মার্ট হলেও খাবারের ক্ষেত্রে ততটা স্মার্ট না।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরাপদ খাদ্যের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এতে সভাপতিত্ব করেন খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারে যতটাই স্মার্ট হয়েছি, পোশাক-আশাকে স্মার্ট হয়েছি। ওপরে ওপরে অনেক বিষয়ে স্মার্ট হয়েছি কিন্তু ভেতরে যে খাবার সে বিষয়ে এখনো ততটাই স্মার্ট হয়ে উঠিনি। আবার আমরা খারাপ দিকগুলোতে যতটা স্মার্ট, ভালো দিকে কিন্তু ততটা স্মার্ট না। খারাপ কাজে অনেক স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, ইউটিউব ব্যবহার করছি, আরও কতকিছু স্মার্টভাবে ব্যবহার করে সুবিধা নিচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা সরকারের একক প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতা অনেক বেশি জরুরি। সচেতনতা বাড়ানো না হলে নিরাপদ খাদ্য আইন প্রয়োগ করে হবে না। সবাইকে সচেতন হতে হবে। আবার যারা খাদ্য উৎপাদন করে, তাদের মনুষ্যত্বের পরিবর্তন করতে হবে। কোয়ালিটি খাবার তৈরি করতে হবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, মানুষ পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে কিন্তু সঠিক পুষ্টির বিষয়ে সঠিক ধারণা নেই। আমরা পুষ্টি জ্ঞানে পিছিয়ে আছি। সুষম পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ না করে আমরা প্রায় অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করে থাকি। আমরা সবজি উৎপাদনে এগিয়ে আছি কিন্তু সবজি খেতে চাই না।
তিনি বলেন, সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে মানুষের গড় আয়ু বাড়ে। আগে আমরা দেখেছি বিভিন্ন রকমের অসাধু কর্মকর্তাদের খাদ্যে ভেজাল মেশানোর কারণে আমাদের স্বাস্থ্যের প্রচুর ক্ষতি হতো। আমরা কিছু মানুষ দেখতাম যাদের শরীরে হাড় বাদে কোনো মাংস ছিল না। তখন মানুষের গড় আয়ু ছিল কম। কিন্তু বাংলাদেশে আগের থেকে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন মানুষের গড় আয়ু ও বেড়েছে।
খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন বলেন, বিশ্বে যে পরিমাণ মানুষ খাবার না খেয়ে মারা যায় তার থেকে অধিক মানুষ খাবার খেয়ে মারা যায়। এর প্রধান কারণ অনিরাপদ খাদ্য। অপরিকল্পিত অনিরাপদ খাদ্য প্রতিনিয়ত আমাদের মৃত্যুর দিকে ধাবিত করছে আর আমরা সেটা দেখছি। আমার যদি একটু সচেতন হতে পারি এবং আমাদের দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করতে পারি তাহলে আমরা নিরাপদ খাবার খেতে পারি। পরিমিত খাবার না খেয়ে তার অধিক পরিমাণ খাদ্য গ্রহণে শরীরে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায় বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত খাবার শরীরকে শক্তি না দিয়ে বার্ডেম দেয়। নিরাপদ খাদ্যের সম্পর্কে জ্ঞান বাড়ানো আমাদের প্রধান কাজ হতে হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে নিরাপদ খাদ্যের কোনো তুলনা নেই।
অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামানসহ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৯ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
এমআইএইচ/আরআইএস