ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সপ্তাহের ব্যবধানে ফের বাড়ল বিদেশি ফলের দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৩
সপ্তাহের ব্যবধানে ফের বাড়ল বিদেশি ফলের দাম

ঢাকা: এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবার আমদানিকৃত বিদেশি ফলের দাম বেড়েছে। অপরিবর্তিত আছে দেশি ফলের দাম।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগে থেকেই বাড়তি দামে বিক্রি হওয়া বিদেশি ফলগুলো কেজিতে ফের ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি ফুজি আপেল বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়; গালা আপেল ২৯০ থেকে ৩০০, সবুজ আপেল ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি। নাশপাতির কেজি ৩২০ টাকা।

মাল্টা ২২০ টাকা, কমলা ২৮০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

আনার বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকায়, ড্রাগন ফল ১৬০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা, রাম্বুটান ১০০০, ডরিয়ন ১০০০ পিয়ার ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে কমেছে লাল আঙুরের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি লাল আঙুর ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা। বাজারে সাদা আঙুরের দেখা মেলেনি।

গত সপ্তাহে এ বাজারে প্রতি কেজি ফুজি আপেল ২৫০, গালা আপেল ২৮০, সবুজ আপেল ২৫০, কমলা ২৬০, মাল্টা ২০০, আনার ৩৫০ থেকে ৫৫০, লাল আঙুর ৪৫০ থেকে ৫০০, নাশপাতি ২৯০, ড্রাগন ফল ১৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।

নতুন করে গত এক সপ্তাহে দাম না বাড়লেও আকাশছোঁয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ খেজুর ও বাদাম। বর্তমানে প্রতি কেজি ইরানি মরিয়ম খেজুর ৯০০, কালমি মরিয়ম খেজুর ১০০০, সৌদি মাবরুম খেজুর ১২০০, মেডজুল খেজুর ১৫০০, আজোয়া খেজুর ১০০০, দাবাস খেজুর ৫০০, বড়ই খেজুর ৪৮০, জিহাদি খেজুর ২০০, খুরমা সাদা-লাল খেজুর ৪৫০, আল জেরিয়ান খেজুর ৪০০, মাবরুম খেজুর ১০০০ থেকে ১৫০০, সাফাভি খেজুর ৯০০ থেকে ১১০০, সুক্কারী খেজুর ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ত্বিন ফলের দাম এক হাজার টাকা কেজি। তেঁতুল ২৪০, কিচমিচ ৪৬০ থেকে ৭৩০ কাজু বাদাম ১৪০০, ভাজা কাজু বাদাম ৫০০, কাঠ বাদাম ৮০০, আখরোট বাদাম ১০০০ থেকে ১২০০, মিক্স বাদাম ৬৫০, ভাজা বাদাম ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া ও এখন বিভিন্ন বিদেশি ফল ও খেজুরের মৌসুম শেষ পর্যায়ে চলে আসায় দাম বেড়েছে। তবে আবার নতুন মৌসুমের ফল এলে দাম কিছুটা কমবে।

কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান ফল বিতানের হিরু ভূঁইয়া বলেন, দাম কেন বেড়েছে সেটি নির্দিষ্ট করে আমরা বলতে পারি না। আমরা রাজধানীর বাদামতলী থেকে ফল ও খেজুর কিনে আনি। ১০ টাকা বেশি দামে আনলে বেশি দামে বিক্রি করি। ১০ টাকা কম দামে আনলে কমে বিক্রি করি। বিদেশ থেকে ফল আমদানির ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ায় অনেক আমদানিকারক এখন ফল কম আনছে। যে কারণে হয়ত দাম বাড়ছে।

মদিনা ফ্রুটস গ্যালারির বিক্রেতা শরীফুল ইসলাম বলেন, এখন অনেক বিদেশি ফলের সিজন প্রায় শেষের দিকে। তাই যেসব পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে ফল মজুদ ছিল তারা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। আবার নতুন সিজনের ফল এলে দাম কমে যাবে।

বিক্রমপুর ফল বিতানের বিক্রেতা ফাহিম বলেন, গত এক সপ্তাহে না বাড়লেও কোরবানির ঈদের পর কাজু বাদামের দাম কেজিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। সব ধরনের খেজুরে বেড়েছে ১০ শতাংশ করে।

খেজুরের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন সিজন শেষের দিকে। তাই দামও বাড়তি। সাধারণত জুলাই মাসে খেজুর হওয়া শুরু করে। খেজুর পাকে সেপ্টেম্বরে। আর বাংলাদেশে আসে ডিসেম্বরের দিকে। তাই আবার যখন খেজুর আসবে তখন দাম কমে যাবে। এখন কিছুদিন দাম বেশি থাকবে।

দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদেরই দুষছেন ক্রেতারা। আনোয়ার হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা শুধু সুযোগ খুঁজতে থাকে কীভাবে দাম বাড়াবে। এখন বিদেশি ফলের সিজন শেষ তাই সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। অথচ এসব ফল ও খেজুর আমাদের দেশে আসছে অনেক আগেই।

আরেক ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী বিনয় ভূষণ মজুমদার বলেন, ফল আমদানি করতে ভ্যাট-ট্যাক্স যতটা না বেড়েছে, বিক্রেতারা তার থেকে আরও অনেক বেশি দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। খুরমা খেজুর এক সময় ১২০ টাকায় কিনতাম। সেটি এখন ৩০০-৪০০ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। তাও মান ভালো নয়। যে যার মতো করে পারছে জিনসিপত্রের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।

আরেক ক্রেতা শ্যামলী গোমেজ বলেন, প্রতিনিয়ত দাম বৃদ্ধির প্রভাব আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের উপর ব্যাপকভাবে পড়ে। আগে নিয়মিত সবুজ আপেল কিনতাম। কিন্তু দাম বৃদ্ধির কারণে এখন পেয়ারা দিয়ে সবুজ আপেলের চাহিদা মেটাচ্ছি। আগে যেখানে আপেল কিনতে পারতাম এক কেজি, সেখানে এখন কিনতে পারছি আধা কেজি। মাল্টা কিনতে হচ্ছে দুটি-তিনটি করে। এসব বিলাসী পণ্য দিন দিন আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে শিশুদের পুষ্টির চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না।

এদিকে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের দেশি ফল। বর্তমানে কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আম্রোপালি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, হাড়িভাঙ্গা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, সুরমা ফজলি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ব্যানানা ম্যাঙ্গো ১৫০ টাকা, আনারস ৩০ থেকে ৬০ টাকা, গাব ১৫০ টাকা, পেঁপে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, লটকন ১৫০ টাকা, পেয়ারা ৫০ থেকে ৮০ টাকা, কাঠলিচু ২০০ টাকা, জাম্বুরা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, আমড়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কাঁঠাল ৫০ থেকে ৫০০ টাকা (আকারভেদে), কাঁচা খেজুর ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পাকা সাগর কলার ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, সবরি কলা ১০০, বাংলা কলা ৮০ এবং চম্পা কলা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৩
এসসি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।