ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১৮ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

কারফিউয়ের প্রভাবে সুনসান কুয়াকাটা সৈকত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৪
কারফিউয়ের প্রভাবে সুনসান কুয়াকাটা সৈকত

পটুয়াখালী: পর্যটন নগরী কুয়াকাটা সৈকতে এখন সুনসান-নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। কয়েকদিন আগেও যে সৈকতে পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকতো আজ তা নিস্তব্ধতা বিরাজমান।

কোথাও কোনো পর্যটকদের আনাগোনা নেই। স্থানীয় কিছু লোকজন সৈকতের অবস্থা দেখতে বেরিয়েছে।

বিগত কয়েকদিন ধরে সারা দেশে কোটা সংস্কার নিয়ে চলমান আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে সব কার্যক্রম। অলস সময় পার করেন পর্যটনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত সব ব্যবসায়ীরা। পুরো সৈকতে নীরবতা। পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। পর্যটক না থাকায় অলস সময় পার করছেন হোটেল কর্মচারীরা। অধিকাংশ হোটেল কর্তৃপক্ষ ছুটি দিয়েছে কর্মচারীদের।

এদিকে কারফিউ জারির ষষ্ঠ দিনে পটুয়াখালীতে বর্ধিত করা হয়েছে সান্ধ্যকালীন আইন শিথিলের সময়সীমা। জেলায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বর্ধিত করেছে জেলা প্রশাসক। এতে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল থেকে কুয়াকাটা, কলাপাড়া ও পটুয়াখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। খুলেছে দোকানপাট, বেড়েছে মানুষের আনাগোনা।

এছাড়া অভ্যন্তরীণ রুটে বাস, সিএনজি, অটো ও অন্যান্য পরিবহন স্বাভাবিক গতিতে চলছে।

এদিকে কারফিউ শিথিল করায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জীবন যাত্রা। সকাল থেকে খুলেছে দোকানপাট। বাজারগুলোতে মানুষের আনাগোনা বাড়তে শুরু করেছে। তবে এখনও সব স্থানে স্বাভাবিক গতিতে ফেরেনি ব্রডব্যান্ড ওয়াইফাই সেবা। উপজেলার শহরগুলোতে লক্ষ্য করা গেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল।

তবে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

সি গোল্ড রিসোর্টের কর্মচারী মো. সিজান বলেন, অলস সময় কাটাচ্ছি। কারফিউর কারণে পর্যটকদের আনাগোনা নেই।  

কানসাই ইনের ম্যানেজার মো. জুয়েল ফরাজি বলেন, কারফিউর কারণে হোটেলে ১৫ জন পর্যটক আটকা পড়েছিল। তাদের সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছি। এখন হোটেলের সব রুম ফাঁকা। কবে নাগাদ আবার পর্যটক আসবে সেটা বলা মুশকিল।  

হোটেল গোল্ডেন ইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম জহির বলেন, পর্যটন ক্ষেত্রে সবার আগে ধাক্কা লাগে। এ ধাক্কা কাটতে সময় লাগে অনেকদিন। রাজনৈতিকসহ নানা সমস্যা তৈরি হলেই হোটেল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সংকটের মুখে আমরা পড়ি। খরচ বাড়ে আয় আসে না। বর্তমান সংকট কাটিয়ে কবে উঠতে সক্ষম হবো তা জানা নেই।  

ক্যামেরা পারসন মো. আলমাচ বলেন, প্রতিদিন ১ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা আয় হতো।  গত কয়েকদিনে প্রতিদিন ১০০ টাকাও আয় হয় না। বৌ-বাচ্চা নিয়ে সংসার চালানো, মাস গেলে বাড়ি ভাড়া দেওয়া, টিকে থাকা এখন কষ্ট হচ্ছে। এটা থেকে মুক্তি চাই। নাহলে না খেয়ে মারা যেতে হবে।

সৈকতে চা বিক্রেতা আলামীন বলেন, মানুষ অস্থিরতা দেখে ভয় পাচ্ছে ঘর থেকে বের হতে। কোটা আন্দোলন নিয়ে সমস্যা তৈরি হওয়ার পর থেকেই কোনো পর্যটকদের আনাগোনা নেই। ফলে চা বিক্রি হয় না। কষ্ট করে দিন পার করি।

হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ বলেন, দেশের মধ্যে কোনো অস্থিরতা থাকলে মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। গত কয়েকদিন ধরে চলমান কোটা আন্দোলনের অস্থিরতায় পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এ সংকট দূর না হলে আমরা পথে বসে যাবো। আমাদের সংকট উত্তরণে সময় লেগে যায় অনেক। আয় না হলেও কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিলসহ নানা খরচ কিন্তু কমে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৪
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।